ননদ ভাবীর পরকিয়া প্রেমের দ্বন্ধেই খুন হয় কলেজ ছাত্র জসিম

ইয়াকুব নবী ইমন, নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ননদ ভাবীর পরকিয়া প্রেমের দ্বন্ধে ও মুক্তিপণের টাকা না পেয়েই কলেজ ছাত্র জসিম উদ্দিনকে(২২) খুন করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করলেও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূল আসামীরা গ্রেফতার হয়নি। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানি ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের মৃধা বাড়ির প্রবাসী ফিারুকের স্ত্রী রেশমী আক্তার পিংকি সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে কলেজের ছাত্র জসিম উদ্দিনের । এরিমধ্যে পিংকির ননদ পারভিন আক্তারের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে জসিম। এতে জসিমের উপর ক্ষিপ্ত হয় পিংকি।

এর জের ধরে রোববার সন্ধায় পিংকি তার মা রওশন আক্তারের মোবাইলে জসিমকে কল করে আমিন বাজার আসতে বলে। জসিম আমিন বাজার আসলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা পিংকির ভাড়াটে সন্ত্রাসী মানিক, জাবেদ, বাবুল ও রাহাতের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে অপহরন করে জাহানারাবাদ নিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে তারা জসিমের পরিবারের সদস্যদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপন না পেয়ে সন্ত্রাসীরা জসিমকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় মামলা নিহত জসিমের বাবা আবুল কাশেম বাদী হয়ে পিংকিসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-১২, তাং-৬-৯-২০২০ইং। পুলিশ পিংকির মা রওশন আক্তারকে গ্রেফতার করলেও ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামীরা গ্রেফতার হয়নি এখনো। এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে খুনিদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছে নিহতের স্বজনরা ও এলাকাবাসী।

নিহতের পিতা ও মামলার বাদী আবুল কাশেম জানান, যারা আমার নিষ্পাপ পুত্রকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, আমার এলাকার যে ছেলেটাকে হত্যা করেছে ছেলেটি খুবই ভালো ছিলো। সে আমার ইউপি কার্যালয়ের ডিজিটাল সেন্টারে কয়েক মাস কাজ করেছে কখনো খারাব কিছু দেখিনি। যারা তাকে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো: রুহুল আমিন জানান, মূলত ননদ ভাবীর পরকিয়া ও মুক্তিপন না পেয়েই ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা । এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা মামলার ৬ নং আসামী প্রধান অভিযুক্ত পিংকির মা রওশন আক্তারকে গ্রেফতার করেছি। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতে মূল খুনিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
ন্যায় বিচারের স্বার্থে কলেজ ছাত্র জসিম হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনবে পুলিশ প্রশাসন এমনটাই প্রত্যাশা নিহতের স্বজনদের ও এলাকাবাসীর।

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...