পিবিএ,সিরাজগঞ্জ: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।এবছর সাজ সাজ রব নেই পালপাড়াসহ জেলার পূজা মন্ডপগুলোতে। প্রভাব পরেছে করোনার। আগামী ২২ অক্টোবর ঘরে ঘরে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা নিয়ে শুরু হচ্ছে দুর্গাপুজা। এজন্য প্রতিমা তৈরিতে করোনার কারনে বিলম্ব হলেও কিছুটা ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগগঞ্জের মৃৎশিল্পীরা। আগামী ২৬ অক্টোবর মহাদশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
কিন্তু মহামারী করোনার কারনে এবার দুর্গাপূজার আনন্দ অনেকটা ম্লান হতে চলেছে। বিগত বছরের পূজার সেই চিরচেনা শহর ও গ্রামাঞ্চলে আলোক-সজ্জা, সাংস্কৃতিক ও আনন্দ-বিনোদন অনেকটাই লুকিয়ে থাকবে অগোচরে। সেই সাথে এবারের শারদীয় উৎসবে বাইরে ঘুরতে থাকছে স্বাস্থ্যবিধির কড়া নির্দেশনা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে কীভাবে হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা সে অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, বেলকুচি, কাজিপুর, সদর ও চৌহালীর বিভিন্ন পূজামন্ডপে চলছে, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা দেবীদুর্গার প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা।
পালপাড়ার প্রতিমা তৈরির কারিগর গুপিনাথ পাল বলেন, প্রতি বছর এ সময় রাতদিন কাদামাটি দিয়ে একটু একটু করে নিপুণ হাতে ২৫/৩০টি প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকি। কিন্তু এ বছর মাত্র ১৫টি প্রতিমার কাজ করছি। করোনার প্রভাবে এ বছর আমাদের অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে।
তিনি আরো বলেন, কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসলেও পুর্ব পুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এখনো কমারখন্দের ভদ্রঘাট ইউনিয়নের পালপাড়ায় ৩০/৩৫টি পরিবার মাঠির তৈরি প্রতিমাসহ হাড়ি, পাতিল, কলস, ডাকনা ও মাটির ব্যাংক ইত্যাদি বানিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। আমি নিজেও বাব-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ এই পেশার সাথে জরিত রয়েছে বলে জানান তিনি।
রণজিত পাল, গোপাল চন্দ্র পাল, শংকর পাল, সুজিত পালসহ প্রতিমা শিল্পীরা বলেন, বাংলা নববর্ষের চৈত্রের মেলা ও দূর্গাপূজা ঘিরে এই মৃৎশিল্পে যে আয় হয় তা দিয়ে চলে তাদের সংসার। এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের আর্থিক অনেক ক্ষতি হয়েছে, যা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু বলেন, দুর্গা পূজার প্রস্তুতির কাজ চলছে। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা করতে হবে। এ সম্পর্কিত ২৬টি নির্দেশনা রয়েছে। আমাদের প্রত্যেকেই এ নির্দেশনা মেনে পূজা করতে হবে। এ বছর সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার প্রায় ৪৯২টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে।
জেলা পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম (বিপিএম) জানান, দুর্গা পূজাকে ঘিরে জেলাব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। সবকটি পূজা মন্ডপে গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে । মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ডপে মন্ডপে নিয়মিত টহল দেয়া হবে বলে তিনি জানান ।
পিবিএ/সোহাগ হাসান জয়/এসডি