পিবিএ, লালমনিরহাট: দৈব নির্দেশ (স্বপ্নে আদিষ্ট) পান দুলাল চন্দ্রের স্ত্রী তুলসী রানী দাসী। আর এই দৈব নির্দেশ পেয়ে স্বামীর কাছে বায়না করে হাতি ক্রয় করে দেয়ার। স্ত্রীকে খুশি রাখতে প্রায় ১৭ লাখ টাকায় সিলেটের মৌলভীবাজার থেকে এনে দেন হাতি। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়লে হাতি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করতে থাকে।
দুলাল চন্দ্র রায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রথিধর দেউতি গ্রামের মৃত বরেন্দ্র নাথের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক। স্থানীয়রা জানান, গত বছরে দৈব নির্দেশ (স্বপ্নে আদিষ্ট) পান দুলাল চন্দ্রের স্ত্রী তুলসী রানী দাসী।
ওই সময় তাকে একটি ঘোড়া, রাজহাঁস ও ছাগল ক্রয় করে দেন। গত সপ্তাহে আবার দুলাল চন্দ্রের স্ত্রী তুলসী রানী দাসী দৈব নির্দেশ (স্বপ্নে আদিষ্ট) পেয়ে স্বামী কাছে বায়না ধরেন। কৃষক দুলাল পড়েন চিন্তায়, কিন্তু স্ত্রীকে খুশি রাখতে নিজের ১১ বিঘা জমির ২ বিঘা বিক্রি করে দেন।
ওই টাকা দিয়ে সিলেটের মৌলভীবাজার থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা দিয়ে এনে দেয় হাতি। সাথে এনেছেন হাতিকে দেখভালের জন্য ইব্রাহীম মিয়া নামে এক মাহুতকে।
২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রথিধর দেউতি গ্রামের দেখা গেছে, বিভিন্নস্থান থেকে ওই হাতি দেখতে লোকজন দুলালের বাড়িতে যাচ্ছেন। দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন হাতিটি দেখতে ভিড় করছেন দুলাল তুলসী দম্পতির বাড়িতে। এ সময় হাতিকে দেখার জন্য রাস্তার পাশে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। হাতির সঙ্গে সেলফি তুলতে অনেকে ব্যস্ত হয়েও পড়েন।
ওই গ্রামের মোতাবর হোসেন জানান, স্ত্রীকে খুশি রাখতে স্বামী দুলাল চন্দ্র প্রতিনিয়ত সব কিছু কিনে দেন। অবশেষে জমি বিক্রি করে তিনি স্ত্রীর কথামতো হাতি কিনে এনেছেন। সত্যি অবাক করার মতো ঘটনা।
তিনি জানান, শুনেছি, স্ত্রী পূজা করেন। আর দৈব নির্দেশ (স্বপ্নে আদিষ্ট) করে তাকে হাতি কিনে যত্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। সে কারণে হাতি কিনে এনেছেন। তাই ওই হাতি ও তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে এসেছি দুলাল তুলসী দম্পতির বাড়িতে।
তুলসী রানী দাসী বলেন, প্রায় এক মাস আগে দেবতা মহাদেব ও বিশ্বকর্মা স্বপ্নে নির্দেশ করেছেন হাতি ক্রয় করে তার যত্ন নিতে। তাই স্বামীর কাছে হাতি ক্রয়ের বায়না ধরায় স্বামী হাতি ক্রয় করেছেন। দেবতা যতদিন রাখতে বলবেন ততদিন হাতি বাড়িতে থাকবে।
হাতির মালিক দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, স্ত্রী স্বপ্নে দেখেছেন দেবতা হাতি কিনে যত্ন নিতে বলেছেন। তাই স্ত্রীর সেই স্বপ্ন পূরণে জমি বিক্রি করে সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় হাতিটি ক্রয় করেছি। হাতিটির দেখভাল করতে মৌলভীবাজার থেকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনে মাহুতকে নিয়ে এসেছি। যেন হাতির পরিচর্যায় কোনো সমস্যা না হয়।
তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে ঘোড়া ও রাজহাঁস কিনতে বলায় সেটাও ক্রয় করে দিয়েছি। স্ত্রীকে খুশি করতেই এই হাতি ক্রয় করেছেন বলেও দুলালের দাবি।
পিবিএ/এসডি