পিবিএ,তালা(সাতক্ষীরা): শতবছর পূর্বে সাতক্ষীরা তালায় ধর্ম প্রচার করতে এসে কোন এক ধার্মিক ব্যক্তি স্থানীয় মানুষের নিরাপদ খাবার পানির সংকট নিরসনে ১ একর ৪০ শতক জমির উপর এই পুকুরটি খনন করেছিলেন। তবে কত সালে এই পুকুরটি খনন করা হয় তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আশির দশকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ সরকারী পুকুর পাড়ের খাস জমি দখল প্রক্রিয়া শুরু করেন। পুকুরপাড়ে’র খাস সম্পত্তি দখল করে গড়ে তোলেন অবৈধ স্থাপনা। এ ছাড়া ময়লা-আবর্জনা সহ গরু-ছাগল ও মানুষের মল-মুত্র পুকুরে ফেলার কারণে দুর্গন্ধের কারখানায় পরিনত হয়েছে পুকুরটি। অবৈধ দখল ও বর্জ-ময়লা ফেলর কারণে আজ চরম অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে এই পুকুরটি। পরবর্তীতে পুকুরটি রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব নেন ডিষ্ট্রিক বোর্ড এমনটি জানালেন প্রবীন রাজনীতিক মীর জিল্লুর রহমান।
প্রথমত দখল নিয়ে অবৈধ দখলদার সেখানে পাকা দোকান-পাট সহ বহুতল ভবন নির্মান করে সংকীর্ণ করে ফেলেছে সরকারী এই পুকুরটি। উপজেলা সদরের রাস্তা বরাবর দোকান ঘর নির্মাণ করে নিজেরা ব্যবসা বানিজ্য শুরু করলেও ক্রমান্বয়ে তারা দখল কার্যক্রম প্রসারিত করে এর ভেতরের অংশে বসত-বাড়ি নির্মাণ,গবাদি পশু পালন ও সেখানকার পুকুরে মাছ চাষ,মুরগীর খামার নির্মাণপূর্বক দখল করে আসছে। ইতোপূর্বে দখলদাররা জেলা পরিষদ থেকে এক সনা বন্দোবস্ত নিয়ে দখল বজায় রাখলেও গত প্রায় দু’বছর যাবৎ সে প্রক্রিয়াও বন্ধ রয়েছে। যার কারণে সরকার প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এমন অবস্থায় সরকারের জেলা পরিষদ তাদের সম্পত্তির দখলমুক্ত পূর্বক সেখানে বহুতল জেলা সুপার মার্কেট নির্মাণ করার প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলা পরিষদরে কোটি কোটি টাকার এই সম্পত্তি পুণরুদ্ধারে ইতোমধ্যে জেলা পরিষদের সার্ভেয়াররা তালা মৌজার খাস খতিয়ানের ১২৯ দাগের ১ একর ৪০ শতক জমির জরিপপূর্বক সীমাণা নিদ্ধারণ করে গেছেন বলে জেলা পরিষদ সুত্রে জানাযায়।
এদিকে জেলা পরিষদের তৎপরতায় বেশ নড়েচড়ে বসেছেন দখলদাররাও। তারাও তাদের দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। দখলদারদের অপতৎপরতায় থমকে যেতে পারে জেলা পরিষদের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির দখলমুক্ত কার্যক্রম। এমনটাই আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সচেতন মহালের দাবী ,কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি সম্পত্তির দখলমুক্ত করে সেখানে জেলা পরিষদ বানিজ্যিক মার্কেট নির্মাণ করলে রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত বেকার তা বরাদ্দ নিয়ে ব্যবসা-বানিজ্য করে সাবলম্বি হতে পারবে।
এবিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য সাংবাদিক মীর জাকির হোসেন জানান, জেলা পরিষদের জায়গায় অবৈধ ভাবে ৪৮টি পাকা দোকান ঘর ও ১২টি পাকা বাড়ী নির্মান করেছেন অবৈধ দখলদাররা। অনেকেই তা আবার ভাড়া দিয়েও খাচ্ছেন।আবার কেউ কেউ অবৈধ দখলীয় ঘর বিক্রি করেও দিয়েছেন ।অবৈধভাবে জবর দখলের ফলে একদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে, অপরদিকে পচা দুর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশও দুষিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি ।
তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার জানান, ইতিপূর্বে জেলা পরিষদের অধীনে তালায় আরও দুটি মার্কেট নির্মাণ হয়েছে, তাতে স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতারা উপকৃত হচ্ছে। জেলা পরিষদের অত্র পুকুরটি ভরাট করে পরিকল্পিত ভাবে মার্কেট নির্মাণ করলে সরকারের রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি তালা বাজারে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরী হবে।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদরে অন্তর্ভুক্ত ১ একর ৪০ শতক সম্পত্তি পুণরুদ্ধারে জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার দিয়ে ঐ সম্পত্তির জরিপপূর্বক সীমাণা নিদ্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি অবৈধ দখলদারে হাত থেকে উদ্ধার করে সেখানে একটি বহুতল জেলা সুপার মার্কেট নির্মাণ করা হবে।এতে সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় হবে।
পিবিএ/মোঃ রোকনুজ্জামান টিপু/এসডি