সৈয়দপুরে বাবা-মা’র খুনিকে গ্রেফতারের দাবিতে সন্তানদের সংবাদ সম্মেলন

মো: জাকির হোসেন, পিবিএ, সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীর সৈয়দপুরের পল্লীতে পশু খামারে স্বামী-স্ত্রীকে গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা ঘটনার সাথে জড়িত খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই দম্পতির সন্তানেরা।

১০ ফেব্রয়ারি বেলা ১২ টায় শহরের পার্বতীপুর রোডে গণ উন্নয়ন সংস্থার সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন খুনের ঘটনায় করা মামলার বাদি মো: সোহেল রানা। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অন্য দুই সন্তান মো: হাবিবুর রহমান (কমল) ও মো: সারোয়ার মোর্শেদ (স্বপন)।

লিখিত বক্তব্যে সংবাদিকদের জানান, আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। কারণ আমাদের বাবা-মা কে হত্যার ঘটনায় পুলিশ জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে খামারের কেয়ার টেকার আব্দুর রাজ্জাকের ঘারে সকল দোষ চাপিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূল আসামীদের আড়াল করে মামলা শেষ ঘোষণা করেছে। যা কোন ভাবেই বিশ্বাসযোগ্য বা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা কেয়ার টেকারের একার পক্ষে এ হত্যাকান্ড ঘটানো কখনই সম্ভব নয়। তাছাড়া হত্যাকান্ডের দিন খবর পেয়ে খামারে যাওয়ার সময় সারোয়ার মোর্শেদ স্বপন দেখতে পান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী কেয়ার টেকারকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। এসময় স্বপনের সাথে কথা হলে কেয়ার টেকার জানায় আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে দেখে নিবো। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশের হেফাজাতে ভর্তি অবস্থায় তার সাথে দেখা করলে সে বলে হত্যার ঘটনাটি ভোর রাতে ঘটেছে এবং এতে ৩ জন জড়িত আছে। জড়িতদের নাম বলার সময় পুলিশ বাধা দেয়ায় সে আর কিছু বলতে পারেনি। অথচ গত ৫ ফেব্রয়ারি হঠাৎ করে সৈয়দপুর থানা পুলিশ প্রেস ব্রিফিং করে বলে যে, কেয়ার টেকার আব্দুর রাজ্জাক নীলফামারীতে ম্যাজিষ্টেটের কাছে উপস্থিত হয়ে নিজেই হত্যা করেছে মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে সে হত্যার কারণ হিসেবে বলেছে, তাকে নিয়মিত বেতন ও ছুটি দেয়া হতোনা, একটি নারী ঘটিত বিষয় নিয়ে মানসিকভাবে চাপ দেয়া ও বিচার শালিস করার কারণে ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীকে হত্যা করেছে।

এই স্বীকারোক্তি যে অত্যন্ত সাজানো তা স্পষ্ট। তাছাড়া তার ভাষ্য কোন রকম যাচাই বাছাই না করেই পুলিশ গ্রহণ করেছে। সে অনুযায়ী মামলার সমাপ্তি ঘোষণা করায় আমরা চরমভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ হস্তান্তরের জন্য নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর গত ৭ ফেব্রয়ারি আবেদন করা হয়েছে। যার অনুলিপি পুলিশের ডিআইজি, পিবিআই’র ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে দিয়েছি।

এসময় তারা হত্যার বিষয়ে সঠিক তদন্ত ও প্রকৃত আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

পিবিএ/কেএইচ/জেডআই

আরও পড়ুন...