পিবিএ ডেস্ক: সুলতানা আক্তার মিতু ওরফে কহিনুর(২৫)। চট্টগ্রামের এক মিতুর রেস কাটতে না কাটতেই আরেক মিতুর খোঁজ। ২৫ বছর বয়সে ছয়টি বিয়ে করেছেন তিনি। বিয়ের পর প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার কাজ।
মিতু বরিশাল সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ এলাকার ফজলু সিকদারের মেয়ে। তার এসব অসামাজিক কর্মকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। সেই সঙ্গে মিতুর বিরুদ্ধে বরিশাল পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে সোমবার(১১ ফেব্রুয়ারি) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে দেয়া সায়েস্তাবাদের দক্ষিণ চরআইচা গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষের স্বাক্ষরিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সুলতানা আক্তার মিতু ওরফে কহিনুর স্কুলে পড়া অবস্থায় একই এলাকার ভুলু শরিফের ছেলে মন্টু শরিফের সঙ্গে প্রথম বিয়ে হয়।
স্বামীর সংসার করার সময় ফেনীর সাইফুল ইসলাম বাকেরের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মিতু। পরে সাইফুলকে বিয়ে করে অর্থ হাতিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন তিনি।
এরপর ভাগনি জামাই আনোয়ার হোসেন রিপনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন মিতু। বিয়ের কয়েক মাস পর রিপনকে ছেড়ে দেন তিনি। পরে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির মো. আমিনুল মাস্টারকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। পরে তাকে ছেড়ে দিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন। এভাবে এ পর্যন্ত ছয়টি বিয়ে করেছেন মিতু।
এসব বিয়ের প্রকৃত কোনো কাবিন বা রেজিস্ট্রি নেই। নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে এসব বিয়ে করেছেন মিতু। সেই সঙ্গে প্রত্যেক স্বামীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা।
মিতুর তিন নম্বর স্বামী আপন ভাগনি জামাই আনোয়ার হোসেন রিপন বলেন, ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি আমার খালা শাশুড়ি সুলতানা আক্তার মিতু ওরফে কহিনুর মোবাইল দিয়ে বলে, বিপদে আছি, বাসায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করিও।
খবর পেয়ে দ্রুত তার বাড়িতে যাই। ওই সময় দরজা খুলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার শুরু করে মিতু। সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মিতুর লোকজন আমাকে আটকে রাখে। পরে বরিশাল নগরীর এক আইনজীবীর চেম্বারে নিয়ে ছবি তুলে স্টাম্পে স্বাক্ষর রেখে বলে তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে গেছে।
কয়েকদিন পরই আমার কাছে টাকা দাবি করে মিতু। টাকা দিতে রাজি না হলে নানাভাবে হয়রানি করে। একপর্যায়ে বরিশাল আদালতে আমার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করে মিতু।
মিতুর বিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছেন দাবি করে ৫ নম্বর স্বামী মামুন হাওলাদার বলেন, আমার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মিতু। সে বলেছে আমাদের বিয়ে হয়েছে। কাবিন তিন লাখ টাকা। ছাড়তে হলে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। তার ওই টাকা দিতে গিয়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে আজ আমি এলাকা ছাড়া।
সম্প্রতি মিতু ওরফে কহিনুরকে আবাসিক হোটেল থেকে পুলিশ আটক করলেও পরে ছাড়া পেয়ে যায়। কিছুদিন আগে তালতলী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে অনৈতিক মেলামেশা শুরু করে। পরে এলাকার লোকজনের হাতে ধরা পড়ে যায় মিতু। সেখান থেকে মিতুকে তাড়িয়ে দেয় এলাকাবাসী।
এসব বিষয়ে জানতে মিতু ওরফে কহিনুরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। তাই বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বরিশাল পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগটি পাঠানো হবে। তারা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন
পিবিএ/এফএস