করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানবসভ্যতার জন্য এমন পরিবেশ-পরিস্থিতি কিছুতেই যুদ্ধের চেয়ে কম ভয়ের নয়। ফলে লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি আরোপের কারণে অনেকেই রমজানের ইবাদত-বন্দেগি নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু সুখের ও খুশির সুসংবাদ হলো- রমজানে যেসব ইবাদত বেশি করার তাগিদ এসেছে, এর বেশির ভাগই ব্যক্তিগত ও অত্যন্ত সহজ।
ঘরোয়া ও ব্যক্তিগতভাবে যে কেউ স্বাভাবিকভাবেই এসব ইবাদত করতে পারেন। আল্লাহ নৈকট্য লাভে বহু দূর এগিয়ে যেতে পারেন। পাঠকদের জন্য নিম্নে রমজানের বিশেষ আমলগুলো তুলে ধরা হলো।
তারাবির নামাজ : রমজানের অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো- তারাবি। তারাবির নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। পারিবারিকভাবেও তারাবির নামাজের জামাত করা যেতে পারে। বিধি-নিষেধের কারণে যদি সম্ভব না হয়, তবে একাকী তো অবশ্যই পড়া যায়। কেননা একাধিক সাহাবি তারাবির নামাজ একাকী আদায় করেছেন বলেও প্রমাণিত।
তাহাজ্জুদ আদায় : তাহাজ্জুদ সারা বছরের আমল। নফল নামাজগুলোর মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের প্রশংসাই কোরআনে করা হয়েছে। রমজানে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় অত্যন্ত সহজ। সাহরির আগে বা পরে দুই-দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদ আদায় করা যেতে পারে।
দোয়া ও প্রার্থনা : রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে দোয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করতেন। রমজানের শেষ রাতে ও ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। সুতরাং এ সময় নিজের, পরিবার, দেশ ও সব মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বেশি বেশি দোয়া করা প্রয়োজন।
তাওবা ও মাগফিরাত : রমজানের একটি বিশেষ আমল তাওবা। রমজানের রোজা বান্দাকে গুনাহমুক্ত করে। তাই বেশি বেশি তাওবা করতে হবে।
দান ও বদান্যতা
আল্লাহর রাসুল (সা.) রমজানে বেশি বেশি দান করতেন। সুতরাং মুমিন অন্য মাসের তুলনায় রমজানে বেশি দান করবে।
কোরআন তিলাওয়াত-অধ্যয়ন : প্রতি রমজানে রাসুল (সা.) ও জিবরাইল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। এ ক্ষেত্রে ‘য়ুদাররিসু’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা অর্থ ও মর্ম অনুধাবনের তাগিদ দেয়।
অন্যের কষ্ট অনুধাবন : মুমিন রোজা রাখার মাধ্যমে ক্ষুধার্ত মানুষের কষ্ট অনুধাবন করতে পারে। তাই সে প্রতিবেশী ও অসহায় মানুষের খোঁজখবর রাখে। বিশেষত করোনাকালে কাজ হারানো লোকদের পাশে থাকা প্রয়োজন।
শুকরিয়া আদায় : আল্লাহ রমজান ও রমজান মাসে যে কোরআন মুসলিম উম্মাহকে দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা।
সহজতা অবলম্বন : পূর্ববর্তী উম্মতের তুলনায় আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মদিকে রোজা পালনে সহজতা দিয়েছেন। যেমন সাহরি খাওয়ার অবকাশ দান। তাই রমজানে জীবনযাত্রাকে সহজ রাখা এবং বিলাসিতা পরিহার করা আবশ্যক।
পাপ পরিহার : হাদিসে রোজাদারকে মিথ্যা, পাপ ও বিবাদ পরিহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা, পাপ ও বিবাদ রোজার মাহাত্ম্য নষ্ট করে।