বিলুপ্তির পথে চুয়াডাঙ্গার মৃৎশিল্প

মাটির জিনিস তৈরির দৃশ্য।

পিবিএ,চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার মৃৎশিল্প নানা সমস্যার কারণে বিলুপ্তির পথে প্রায়। মৃৎ কারিগররা এ শিল্পে লাভবান না হওয়ায় এ পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন তারা। মৃৎ কারিগরদের তৈরি পণ্য অন্য আধুনিক পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। মৃৎ কারিগররা বলছেন সরকারী সহযোগিতা পেলে মৃৎ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভাব হবে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে মৃৎ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতা প্রয়োজন। তাহলেই মৃৎ শিল্পে অধুনিকতার ছোয়া লাগলে আবারও সুদিন ফিরে পাবে মৃৎ কারিগররা।

মৃৎ কারিগররা তাদের পুরাতন পেশা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে দরিদ্র থেকে অতি দরিদ্র হচ্ছে। কিন্তু আশার আলো দেখছেন একদিন এ পেশায় সুদিন ফিরবে। এমনটায় প্রত্যাশা তাদের মুখে ।
মৃৎ শিল্পের প্রয়োজনীয় জিনিস মাটি, খঁড়ি, বিদ্যুত, লেবারসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। মৃৎ শিল্পের কাজ এখনও হাতেই তৈরি করছেন কারিগররা। এ শিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া না লাগাই বিলুপ্তির প্রধান কারণ। বছরের কিছু বিশেষ দিন পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা ছাড়া এ শিল্পের জিনিসে তেমন কোন চাহিদা নেই। এ সব কারণে তারা পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন মৃৎ কারিগররা । মৃৎ শিল্প বিলুপ্তির দার প্রান্তে। অনেকেই আবার ভারতে পাড়ি জমাচ্ছেন।

মৃৎ কারিগর আকাশ লাল বলেন, মৃৎ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারী ভাবে অর্থ সাহায্য ও উদ্যোগ গ্রহণ না মৃৎ শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন। মাটির তৈরি জিনিসের দাম তুলনা মুলক ভাবে কম, হওয়ায় লাভ তেমন হয়না বলেই চলে। এ সব কারণে পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছি আমরা। বাপ-দাদার পুরাতন পেশা বলে কষ্ট করে বাঁচিয়ে রেখেছি এত দিন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রাম, মোমিনপুর গ্রাম, ডিঙ্গেদহ গ্রাম, দামুড়হুদা উপজেলার কুষাঘাটা গ্রামের ৮-১০ টি পরিবার মৃৎ শিল্পের কাজ করেন। আগে জেলার চারটি উপজেলায় প্রায় ২৫০টি পরিবার এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। সরকারী ভাবে আর্থিক সহযোগিতা ও ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে লোন পেলে এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখা সম্ভাব। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজ করেন।

চুয়াডাঙ্গার উপ-ব্যবস্থাপক বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) হামিদুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গায় এক সময় অনেক মৃৎ শিল্প গড়ে উঠে ছিল। নানা কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারী ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।আমার জানা মতে চুয়াডাঙ্গায় বর্তমানে ৮-১০টি পরিবার মৃৎ শিল্পের সাথে জড়িত আছে। মৃৎ শিল্পের কাজ করে তারা জীবন- জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের সার্বিক ভাবে সাহায্যের চেষ্টা করছি ।

পিবিএ/টিটি/হক

 

আরও পড়ুন...