৬ মাস পর কবর থেকে গৃহবধূর মৃতদেহ উত্তোলন

পিবিএ গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে দাফনের ৬ মাস পর ময়না তদন্তের জন্য জ্যোতি হীরা ওরফে সোহাগী নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকারের নির্দেশে আজ রবিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অমিত রায়ের উপস্থিতিতে মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামের নিজ বাড়ীর কবর থেকে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাদন্তের জন্য মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত গৃহবধূ জ্যোতি হীরা ওরফে সোহাগী মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামের জ্যাকব হীরার মেয়ে।

মামলার বিবরনে জানান যায়, ওই গ্রামের আদ্বিত্য রায়ের ছেলে অচিন্ত রায় একই গ্রামের জ্যাকব হীরার মেয়ে জ্যোতি হীরা ওরফে সোহাগীকে বিয়ে করে রাজধানী মিরপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকে। কয়েকদিন পর ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে জ্যোতি হীরাকে মারধরসহ শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। পরে জ্যোতি বাবার বাড়ী চলে আসলে টাকা দিতে না পারায় ওখানেই আবারো জোত্যির উপর নির্যাতন চালায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। পরে মারাত্মক আহতাবস্থায় জ্যোতিকে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন ঢাকায় নিয়ে আসে। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিসাধীন অবস্থায় বিগত ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জ্যোতি মারা যান।

পরে জোত্যির মৃতদেহ বাড়ীতে নিয়ে আসলে বিচার পাবার আশ্বাসে তাকে দাফন করা হয়। কিন্তু বিচার দেয়া নিয়ে তালবাহানা শুরু করলে গত বছর ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর মুকসুদপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অচিন্ত রায়, আদ্বিত্য রায়, যোগেশ রায় ও অন্তরা রায়কে আসামী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে জ্যোতির পিতা জ্যাকব রায়। আদালত বাদীর মামলা আমলে নিয়ে মুকসুদপুর থানায় এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিলে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।

মামলার বাদী ও মুকসুদপুর থানার এসআই (সাব-ইন্সেপেক্টর) নব কুমার ঘোষ জানান, মামলাটির তদন্তভার আমার উপর পড়লে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করার প্রয়োজন পরে। এসময় আমি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে লাশ উত্তোলন করার জন্য আবেদন করলে তিনি মঞ্জুর করেন। পরে আজ দুপুরে জেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অমিত রায়ের উপস্থিতিতে কবর থেকে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়। ময়না তদন্তের জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিবিএ/বিএস/জেডআই

আরও পড়ুন...