পিবিএ ডেস্ক: পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণ চাকুরীতে যোগদানের পর দীর্ঘ ২৬/২৭ বছরেও পদোন্নতি না পাওয়ায় এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে ১ম থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনার জন্য পিটিআইগুলোকে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে রূপান্তর করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর সকল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করার জন্য পূর্বেই ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখ সমিতির সাধারণ সভার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। অদ্য ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখ পিটিআই কর্মকর্তা সমিতির সকল ইউনিট অর্থাৎ সকল জেলার পিটিআই কর্মকর্তাগণ সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
প্রতি পিটিআইতে ১৭ জন ইন্সট্রাক্টর এর পদোন্নতি পদ মাত্র ১টি সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট। তাই ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির সুযোগ ১৭:১ অনুপাতে। অথচ এ সুযোগ পূর্বে ১০:১ এবং ১২:১ অনুপাতে ছিল। পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পদ ১০/১২ থেকে ১৭ জন করা হয়েছে আর পদোন্নতির পদ কমানো হয়েছে। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমী (নেপ) স্বায়ত্বশাসিত করে পদোন্নতির সুযোগ রহিত হয়েছে। নেপ এ পিটিআই কর্মকর্তাদের ৩৭টি পদে পদোন্নতির সুযোগ ছিল। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গবেষণা কর্মকর্তা ও নেপের সহকারী বিশেষজ্ঞ থেকে পিটিআই সুপার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয় অথচ উক্ত পদে পিটিআই ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা অফিসার ও গবেষণা কর্মকর্তা ও বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের শিক্ষা অফিসার পদের প্রায় সবগুলো পদে সহকারী জেলা প্রাথমিক অফিসারগণ কর্মরত আছেন। উল্লেখ্য যে ৬৪টি জেলা থেকে প্রায় ৫০ জন এডিপিইও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে কর্মরত। ৫১৫ জন উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতির পদ ৬৪২ = ১২৮ জন এবং ডিপিই, ডিডি অফিসের শিক্ষা অফিসার ও গবেষণা কর্মকর্তা পদ অর্থাৎ তাদের পদোন্নতির অনুপাত ৩:১। অথচ পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণের পদোন্নতির অনুপাত ১৭:১।
১৯৯৭ সনে নিয়োগ প্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ প্রায় সকলেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং ২/৩ জন সহকারী পরিচালক পদেও পদায়ন পেয়েছেন। অথচ ১৯৯২ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণ সকলেই পদোন্নতি ব্যতিরেকে একই পদে কর্মরত। তাই পিটিআইতে সহকারী সুপারের পদ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। পিটিআই সুপারিনটেনডেন্টগণ ১২ বছর যাবৎ একই পদে চাকুরী করার পরও পদোন্নতি পাচ্ছেন না। তাই পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণের পদোন্নতি আরো বিলম্বিত হচ্ছে।
পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এভাবে রহিত থাকলেও মাঠ পর্যায়ের ইউআরসি কর্মকর্তাদের আবার পিটিআই এর সহকারী সুপার হিসেবে পদোন্নতির প্রস্তাব করা হচ্ছে যা হবে মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মত। বর্তমান প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধি কার্যকর হলে পিটিআই ইন্সট্রাক্টরগণের পদোন্নতির পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই একই গ্রেডের ভিন্ন পদে সমন্বিত গ্রেডেশন তালিকার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদান করা এখন সময়ের দাবী। এছাড়া নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বিধিমালা ২০১১ এর গেজেট সর্বত্র অনুসরণ হওয়া উচিত। তাই শিক্ষক প্রশিক্ষণের মানবৃদ্ধির জন্য সময়ের চাহিদা অনুযায়ী পিটিআইগুলোকে টিটিসির অনুরূপ “প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে” রূপান্তর করা দরকার। সেজন্য উপরোক্ত দাবীতে আজ একযোগে সকল জেলায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পিটিআই কর্মকর্তাদের প্রধান দাবী ২টি
১। প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের মানবৃদ্ধির জন্য পিটিআইকে টিটিসির মত প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে রূপান্তর করা।
২। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিতে একই গ্রেডের ভিন্ন পদে সমন্বিত গ্রেডেশন তালিকার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদান।
পিবিএ/এইচএইচ