৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে করোনা নিয়ন্ত্রণে করণীয় নিয়ে বৈঠকে বসে সরকার। সেই বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

জাহিদ মালেক বলেন, টিকা দেয়ার বিষয়ে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সে কারণে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করছি। যেখান থেকে ইউনিয়নের সমস্ত লোকজন, আপামর জনসাধারণ যারা টিকা নিতে চান, তারা ওখানে এসে টিকা নিতে পারবেন।

তিনি বলেন, এই সুবিধাটা আমরা করে দিচ্ছি। তারা এনআইডি কার্ড নিয়ে আসলেই টিকা দিতে পারবেন।

এ সময় পঞ্চাশোর্ধ নারী-পুরুষদের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পঞ্চাশোর্ধ নারী ও পুরুষ বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন। ঢাকা শহরের হাসপাতালে যারা ভর্তি আছেন তাদের ৭৫ শতাংশ পঞ্চাশোর্ধ এবং তাদের ৯০ শতাংশ টিকা নেননি। তাদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যারা পঞ্চাশোর্ধ আছেন তারা যেন তাড়াতাড়ি ইউনিয়ন পর্যায়ে এসে টিকা নিতে পারেন, আমরা সেদিকে জোর দিচ্ছি। টিকা আরও বেশি যখন হাতে আসবে তখন আমরা আরও নিচে যেতে পারব অর্থাৎ ওয়ার্ড পর্যায়ে আমরা চিন্তা-ভাবনাই রেখেছি।

এদিকে টিকার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন পৃথিবীর যেখানেই টিকা দেয়া হয়েছে সেখানেই সংক্রমণের গতি কমে গেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও আমরা এই দৃশ্যটা দেখেছি। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের টিকার কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তিনি বয়সের সীমাও কমিয়ে দিয়েছেন এবং নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি আরেকটা নির্দেশনা দিয়েছেন এনআইডি কার্ড নিয়ে যে যাবেন তাকে টিকা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, শুধু নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তারা নয়, আমাদের জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা, সমাজের নেতারা, আমাদের সবাইকে এটার (টিকা) সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। না হলে আমরা এই জায়গা থেকে সহজে পরিত্রাণ পাব না। সে জন্য আমরা টিকা কার্যক্রম এবং অন্যান্য কার্যক্রম যা চলবে তাতে সমাজের নেতা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সবাইকে সম্পৃক্ত করব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে যে টিকাগুলো এসেছে তা দিয়ে কার্যক্রম চলবে। পরবর্তীতে যে টিকা আসবে, সেটার ব্যবহার আমরা পরবর্তী সময়ে করব।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনটি বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা সবাই মাস্ক পরব, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব এবং সবাই টিকা নেব। এটাই হলো আমাদের মূলকথা।

এ সময় তিনি জানান, যারা সম্মুখসারির যোদ্ধা তারা টিকার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। নেভি, এয়ার ফোর্স, কোস্টগার্ড, বিজিবিসহ সব বাহিনীর সদস্যদের টিকার আওতায় আনা হবে। সেই সঙ্গে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের পরিবার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে।

তিনি আরও জানান, যারা টিকা দিচ্ছেন তারাই টিকা দেয়ার কার্যক্রম চালাবেন। তবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, নেভিসহ বিভিন্ন বাহিনীর ভেতরে টিকা দেয়ার কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বাহিনী তদারকি করবে।

মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পুলিশ প্রধান, বিজিবি প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট দফতর ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন...