জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিন গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রপতি

পিবিএ,ঢাকা: সাংবাদিকতার নিয়মনীতি মেনে এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “গণমাধ্যম, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া অন্যটি অচল।”

তিনি বলেন, “গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারে সংবাদমাধ্যম। তবে তা হতে হবে নিয়মনীতি ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে। মিথ্যা, উস্কানিমূলক ও হলুদ সাংবাদিকতা কখনো গণতন্ত্রের বন্ধু হতে পারে না।”

গণমাধ্যমের বিকাশের ফলে এ খাতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, “তাই প্রতিযোগিতা করেই গণমাধ্যকে এগিয়ে যেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নিয়মনীতি মেনে এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।”

গণমাধ্যম খাতে বেসরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ এখন অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক। এটা নিঃসন্দেহে গণমাধ্যমের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।”

“তবে একইসঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে এসব গণমাধ্যম যাতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ব্যবহৃত না হয়। জাতীয় স্বার্থকে প্রধান্য দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে যাতে এসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে তাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলকে ‘ওয়াচডগের’ ভূমিকা পালন করতে হবে।”

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, “বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ করে সংবাদপত্র ও সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য যে নীতিমালা ও আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে তা দেশে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে সহায়ক হয়েছে বলে আমি মনে করি। অন্যান্য গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও এই নীতিমালা ও আচরণবিধির প্রযোজ্যতা বিবেচনা করতে হবে।”

সাংবাদিকতায় এখন তরুণ শক্তি যুক্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় উচ্চ শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। গণমাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ততা এ পেশার মর্যাদা ও বিকাশকে আরও এগিয়ে নেবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”

“তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ এসব নবীন সাংবাদিকদের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা মেধা ও দক্ষতার পাশাপাশি সততা ও নিরপেক্ষতাকে হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাবেন এবং প্রিয় মাতৃভূমির স্বার্থকে সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার দেবেন। হবেন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মডেল। আপনাদের হাতে এখন বাংলাদেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি।”

প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

এ সময় রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন।

এবার পাঁচ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে প্রেস কাউন্সিল পদক দেয়া হয়। তারা হলেন- সমকালের প্রয়াত সম্পাদক গোলাম সারওয়ার (আজীবন), দ্য ফিনানশিয়াল এক্সপ্রেসের জসীম উদ্দিন হারুন (উন্নয়ন সাংবাদিকতা), বগুড়ার দৈনিক মুক্তবার্তার মুরশিদ আলম (গ্রামীণ সাংবাদিকতা), কালের কণ্ঠের মাদারীপুর প্রতিনিধি আয়শা সিদ্দিকা আকাশী (নারী সাংবাদিকতা), নিউ এইজের সনি রামানী (আলোকচিত্র সাংবাদিকতা), দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক আজাদী।

পিবিএ/জেআই

আরও পড়ুন...