পিবিএ,ডেস্ক: বিশ্বকে জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফোরাম-সিভিএফ সভাপতি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ২০২০-২০২৪ সাল এই ৫ বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহের পরিকল্পনা দিতে প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে গ্লাসগোর কপ-২৬ সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ফোর্জিং এ সিভিএফ-কপ-২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন পর্যন্ত প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশাজনক।
ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জলবায়ু অর্থায়নে পরিকল্পনা জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে আমরা সিভিএফ সদস্যরা এই কপ-তেই উন্নত দেশগুলোর কাছে ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত পুরো ৫ বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহের পরিকল্পনা দাবি করছি, যেখানে অভিযোজন ও প্রশমনে অর্ধেক অর্থ সরবরাহ করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্বক প্রভাব মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর যথেষ্ট সক্ষমতা না থাকার কথা তুলে ধরে সিভিএফ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, পর্যাপ্ত, টেসকসই এবং সহজ জলবায়ু অর্থায়ন ছাড়া কার্যকর কর্মপরিকল্পনা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সদস্য দেশগুলো। এই সংকটের জন্য আমাদের কোনো ঐতিহাসিক ভূমিকা বা দায় না থাকা সত্ত্বেও এটি হচ্ছে।
উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিপদ বেড়ে যাচ্ছে মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার পর্যাপ্ত সক্ষমতা বা সামর্থ্য নেই। দুর্ভাগ্যজনক এই উভয়সঙ্কটের মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য জলবায়ুর ধ্বংসাত্বক পরিণতি মোকাবিলায় সিভিএফ দেশগুলো নিজেরা নিজেদের মতো ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হচ্ছে।
সিভিএফ দেশগুলোর নিজস্ব ব্যবস্থা গ্রহণের উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে আমরা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ চালু করেছি। কম কার্বন কৌশলের মাধ্যমে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে এই পরিকল্পনাটি নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে অন্য ৩৭টি দেশও এ রকম তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়েছে। এটি প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে বলবে।
‘ক্লাইমেট ইর্মাজেন্সি প্যাক্ট’ চুক্তির কথা তুলে ধরে সিভিএফ নেতা বলেন, আমরা একটি ‘ক্লাইমেট ইর্মাজেন্সি প্যাক্ট’ নিয়ে এসেছি। এটি তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্রমাগত অগ্রগতি নিশ্চিত করবে।
শেখ হাসিনা কপ-২৬ প্রেসিডেন্ট এবং ইউএনএফসিসিসি’র সব সদস্যদের এই ‘ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি চুক্তি’ গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
এ সংলাপে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিভিএফের থিমেটিক অ্যাম্বাসেডর সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল।
পিবিএ/এমআর