ঘুম থেকে ওঠার পর এক কাপ চা সহজেই শরীর ও মন চাঙা করে দেয়। তাছাড়া অফিসের কাজের ফাকে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় চা ছাড়া চলেই না। কারো কারো আবার দিনে চার থেকে পাঁচ কাপ চা পান করারও অভ্যাস রয়েছে। শীতকালে এই সংখ্যা আরো বেড়ে যায়।
অধিক পরিমাণে চা পান অস্বাস্থ্যকর। ক্যাফিন ও চিনির কারণে অধিক পরিমাণে চা পান করলে শরীরের নানা ক্ষতি হতে পারে। এই কথা কারোই অজানা নয়। তবে চায়ে চিনির পরিবর্তে যদি গুড় ব্যবহার করেন, তবে তা স্বাস্থ্যোপযোগী হয়ে ওঠে। আবার নানা রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতেও সাহায্য করে।
গুড়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং বি, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, সুক্রোজ, গ্লুকোজ, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও মিনারেল থাকে। তাই গুড়ের চা পান করলে হাড় মজবুত হয়। আবার গুড়ের চায়ে কিছু আয়ুর্বেদিক উপাদান মেশালে তা আরো উপকারী হয়। আবার গুড় শরীরের পক্ষে গরম, তাই শীতকালে গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
গুড়ের চা পান করার যত উপকারিতা
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে গুড়ের চা।
- পিরিয়ডের সময় ব্যথা হলে গুড়ের চা পান করতে পারেন। এর ফলে ব্যথা কম হয়।
- পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে গুড়ের চা। তাইতো খাবার পর এক টুকরো গুড় খাওয়া উচিত।
- মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথার সমস্যা থাকলে গরুর দুধ দিয়ে গুড়ের চা মিশিয়ে পান করুন, তাহলে স্বস্তি পাবেন।
- বার বার ক্লান্তি অনুভব করলে গুড়ের চা পান করুন, এর ফলে ক্লান্তি দূর হবে। এই চা শক্তি প্রদান করে এবং নানা অভাব দূর করে।
- গুড়ের চা ফ্যাট কম করতে সাহায্য করে। এটি ওজন কম করে। চিনির তুলনায় গুড়ে ক্যালোরি কম থাকে, এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- গুড়ের চা ভালো ডিটক্সের কাজ করে। যে ব্যক্তিদের গলা ও ফুসফুসে বার বার সংক্রমণ হয় তারা এই চা পান করলে উপকার পেতে পারেন।
- রক্তের অভাব থাকলে গুড় খাওয়া বা এর চা বানিয়ে পান করলে এই অভাব দূর হয়। গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্তের অভাব দূর করে।
- গুড়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস থাকে। এছাড়াও গুড়ের চা পান করলে হাড় মজবুত হয়। প্রতিদিন গুড় খেলে খনিজের ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
- গুড় গরম প্রকৃতির হয়। এটি শরীর যেমন গরম রাখে, তেমনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। শীতের সময় গুড়ের চা পান করলে সর্দি ও কফ থেকে স্বস্তি পাওয়া যায়। গুড়ের চায়ে আদা, গোলমরিচ ও তুলসি পাতা দিয়ে পান করুন।
- গুড়ের চা পান করলে পাচন তন্ত্র সুস্থ থাকে। পাশাপাশি বুক জ্বালার সমস্যাও কমে। উল্লেখ্য গুড়ে কৃত্রিম সুইটনার কমই থাকে। চিনির তুলনায় এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে, তাই শীতকালে গুড়ের চা পান করা উপকারী।
গুড়ের চা বানানোর পদ্ধতি
একটি পাত্রে পানি দিয়ে তা ফুটিয়ে নিন। তারপর তাতে গুড় মেশান। এর পাশাপাশি এতে গোলমরিচ, লবঙ্গ, এলাচ, আদা ও তুলসি পাতা দিন। কিছুক্ষণ ফুটিয়ে এতে চা পাতা মিশিয়ে দিন। তারপর ছেকে নিন। চেষ্টা করুন দুধ ছাড়া এই চা পান করতে।