ধানমন্ডির এক বাসায় চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৪

মোঃ দীন ইসলাম,ঢাকা: গত ০৭ ডিসেম্বর ২১ ইং দিবাগত রাতে ধানমন্ডির একটি বাসার জানালার গ্রীলকেটে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে চুরির ঘটনা ঘটে।এ সময় চোর চক্রের সদস্যরা বাসার ভিতরে আলমিরা, ওয়ারড্রপ ইত্যাদি ভাংচুর করে এবং প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। চুরির ঘটনাটি প্রবাসে অবস্থানরত বাড়ির মালিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখতে পান এবং পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করলে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বর্ণিত ঘটনার প্রেক্ষিতে র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে র‍্যাব-২ রাজধানীর মোহাম্মদপুর, এবং ঢাকা উদ্যান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ নাসির শেখ,মোঃ ফরহাদ মোঃ সেলিম,মোঃ আজাদ দের কে রাজধানীক বিভিন্ন জায়গা অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। উক্ত অভিযানে চুরির কাজে ব্যবহৃত ২টি দেশীয় অস্ত্র, ৪টি মোবাইল, ২টি পরিধেয় বস্ত্র, নগদ ৪৮০০.০০ টাকা এবং বাসা থেকে লুন্ঠিত গলিত স্বর্ণের বার এবং ৪টি অলঙ্কার উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা চুরির সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা ধানমন্ডী-মোহাম্মদপুর এলাকা কেন্দ্রিক একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য, যার সদস্য সংখ্যা ৬-৭ জন। গ্রেফতারকৃতরা সকলেই বিভিন্ন পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন যাবৎ বর্ণিত এলাকা সমূহে সংঘবদ্ধভাবে চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ করে আসছে। এই চোর চক্রের একজন সদস্য অটোরিক্সা চালক এবং সে অটোরিক্সা চালকের আড়ালে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফাঁকা বাসা বাড়ী এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের খোঁজ খবর নেয়। গত ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ ধানমন্ডি এলাকায় ফাঁকা বাড়ীর সন্ধান পায়। অটোরিক্সা চালক বিষয়টি গ্রেফতারকৃত নাসিরকে জানায় এবং নাসির তার ভাড়াকৃত মেসে ০৫জন চোর চক্রের সদস্যদের’কে নিয়ে পরিকল্পনা করার জন্য একত্রিত হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ দিবাগত রাত ০০৩০ ঘটিকায় একটি ভ্যান নিয়ে চুরির উদ্দেশ্যে ধানমন্ডির পূর্বে নির্ধারিত বাসার দিকে রওনা করে চুরির ঘটনা ঘটায়।

বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে, চুরির ঘটনার পরদিন সকালে তারা চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে তাদের পূর্ব পরিচিত গ্রেফতারকৃত আজাদের স্বর্ণের দোকানে যায় এবং ৫০,০০০.০০ টাকায় চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে দেয়।

গ্রেফতারকৃত নাসির পেশায় একজন স্যানিটারী মিস্ত্রি। সে ৫-৬ বছর যাবত তার পেশার আড়ালে চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ে।ফরহাদ পেশায় একজন ফল বিক্রেতা। সে এই চোর চক্রের অন্যতম একজন সদস্য। ধানমন্ডির বাসায় চুরির ঘটনায় তাকে বাসার ভিতর টর্চ লাইট দিয়ে আলো ফেলতে এবং গ্রীল কাটতে দেখা যায়।সেলিম পেশায় একজন সবজি বিক্রেতা। সে এই চোর চক্রের একজন নিয়মিত সদস্য।আজাদ একজন স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী। বসিলায় তার একটি নিজস্ব স্বর্ণের দোকান রয়েছে। এই ব্যবসার পাশাপাশি চোরাই স্বর্ণালঙ্কার ক্রয়-বিক্রয় এর কাজে জড়িত।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান, র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার ঐল মঈন।

আরও পড়ুন...