‘বের করে দেওয়া’ শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালের মালিক গ্রেফতার

পিবিএ,ঢাকা: রাজধানীর শ্যামলীতে একটি বেসরকারী হাসপাতাল “আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল” এ সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ না করায় চিকিৎসাধীন জমজ শিশুকে জোর করে বের করে দেওয়ার ফলে জমজ এক ভাইয়ের মৃত্যু ও অপর ভাইয়ের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

ভূক্তভোগী মোহাম্মদপুর থানায় আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের মালিক ও পরিচালককে আসামী করে একটি মামলা রুজ্জু করে। যাহার নম্বর ৪২, ধারা ৩০৪-ক ।

র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-২ ও র‌্যাব- ৩ এর যৌথ অভিযানে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা হতে আমার বাংলাদেশ হাসাপাতালের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার (৫৭), পিতা-মুন্সী ইসহাক আলী সিকদারকে গ্রেফতার করা হয়। বর্ণিত ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ঘটনা সংক্রান্ত সংশ্লিষ্টতার বিভিন্ন তথ্যাদি প্রদান করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত জানায় যে, আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে রুগী ভর্তির লক্ষে বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে দালাল নিয়োগ করা আছে। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বর্ণিত হাসপাতালে গত (২ জানুয়ারি) জমজ ভ্রাতাদ্বয়কে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর হতে বিল পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয় অন্যথায় চিকিৎসা করা হবে না বলে জানায়। ভিকটিম ৪০,০০০ টাকা পরিশোধ করে। তথাপিও অতিরিক্ত আরও টাকা প্রদানের জন্য চাপ দেয় বলে জানা যায়। পরবর্তীতে আর অর্থ প্রদান না করায় চিকিৎসা বন্ধ রাখা হয় বলে ভূক্তভোগী অভিযোগ করে। একপর্যায়ে অর্থ না পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় জমজ ২সন্তানসহ ভূক্তভোগীদের’কে বের করে দেয়া হয়।

গ্রেফতারকৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে দীর্ঘ ২০-২২ বছর যাবত প্রায় ৬টি (রাজারবাগ, বাসাবো, মুগদা, মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায়) বিভিন্ন হাসপাতালে ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। সম্প্রতি বিগত প্রায় এক বছর যাবত শ্যামলীতে বর্ণিত হাসপাতাল খুলে ব্যবসা শুরু করে। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান হতে এই হাসপাতালের সাথে সে দালাল সিন্ডিকেট জড়িত করে। বিভিন্ন সরকারী হাসপাতাল হতে রোগীদের ফুসলিয়ে বর্ণিত হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা হত।

গ্রেফতারকৃত জিজ্ঞাসাবাদে হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানায় যে, বর্ণিত হাসপাতাল পরিচালনার বিধি মোতাবেক সার্বক্ষনিক ৩ জন চিকিৎসক ডিউটিরত থাকার কথা থাকলেও সার্বক্ষনিক ১জন ডিউটিরত থাকত। হাসপাতালটিতে ২টি আইসিইউসহ ৩০টি বেড এর প্রাধিকার রয়েছে। এতদসংক্রান্ত বিষয়ে সে উল্লেখ করে তার হাসপাতালে ৬টি আইসিইউ অর্থাৎ ৪টি আইসিইউ বেশী; তন্মধ্যে ভেন্টিলেটর রয়েছে ২টি। ৯টি এনআইসিইউ থাকলেও ইনকিউভেটর ছিল ১টি ও ১৫টি সাধারণ বেড রয়েছে। মূলত আইসিইউ কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করে সে অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পিবিএ/জেডএইচ

আরও পড়ুন...