পিবিএ,ঢাকা: ভারতীয় পুলিশ হেফাজত হতে পলাতক আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্কেমিং চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের একটি টিম।
মঙ্গলবার(১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশান-১ এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হল- হাকাম জানবুরকান (৫৫) ও মো: মফিউল ইসলাম।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারের সময় তাদের থেকে ৫টি বিভিন্ন মডেলের ফোন, ১টি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্কেমিং চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তুরস্কের নাগরিক হাকান গত ২ জানুয়ারি হতে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে বিভিন্ন দেশের একাধিক ক্লোন কার্ড ব্যবহার করে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করেন, কিন্তু ইস্টর্ণ ব্যাংক লিঃ এন্টি স্কেমিং টেকনোলজি ব্যাবহার করায় এ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয় এবং হ্যাকার কর্তৃক স্কেমিং রোধ করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হাকান জানবুরকান গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন এবং রাজধানীর পল্টন এলাকায় হোটেল দ্যা ক্যাপিটালে অবস্থান করে। ২ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, ইউএসএ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক, সৌদিআরব,অস্ট্রিয়া, জার্মানী, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে সহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে,হাকান জানবুরকান ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টন বাজার পুলিশ স্টেশনের এটিএম স্কোমিং মামলায় অন্য এক তুরস্কের নাগরিক এবং ২ বাংলাদেশীসহ গ্রেফতার হন।
ওই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামিগণ ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে কার্ড ক্লোনিং করে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেন। ভারতে প্রায় ২০ মাস জেলে থাকার সময় আগরতলার গোবিন্ড বাল্লব পান্ট হাসপাতাল এর পুলিশ হেফাজত হতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি সুকৌশলে পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে এক ভারতীয় ব্যক্তির সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপালে পৌঁছান। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফিরে যান এবং নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন।
এই চক্রে একাধিক বাংলাদেশী সহ তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত আছে মর্মে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান তিনি।
পিবিএ/জেডএইচ