সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে চক্রটি ব্লাকমেইল করত

পিবিএ,ঢাকা: ট্রান্সজেন্ডার বিউটি ব্লগার সাদ মুআ-কে যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার মূলআসামিসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রোববার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী থেকে মূলহােতা ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক ওরফে সানি(২১), সাইমা শিকদার নিরাহ আরজে নিরা (২৩), আব্দুল্লাহ আফিফ সাদমান রিশু (১৯)কে গ্রেফতার করা হয়।

তারা সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম ব্যবহার করে আপত্তিকর ছবি, ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমদের হেনস্থা ও ব্লাকমেইল করতো।

রোববার ২৩ জানুয়ারি বিকালে কাওরান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

এসময় তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের ছিনিয়ে নেওয়া মােবাইল উদ্ধারসহ প্রতারণার কজে ব্যবহৃত অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, খেলনা পিস্তল, মােবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়

খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারায় এক খ্যাতনামা বিউটি ব্লগার ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটে। ওই ভিকটিম একজন প্রতিষ্ঠিত কর্মজীবী। তিনি নিজ যােগ্যতা, অধ্যবসায় ও কর্মদক্ষতায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি দেশের প্রচলিত আইন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা থেকে স্ব-উদ্যোগে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়েছেন বলে জানান তিনি।

মঈন আরও বলেন, ওই ঘটনায় ভূক্তভােগী রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করলে র‌্যাব গােয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গােয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব গতকাল রাত ও আজ সকালে রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যে জানা যায়, এরা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। ইশতিয়াক এই চক্রের মূলহােতা এবং আরজে নীরা ও অপর সদস্য সাদমান আফিফরিশু তার অন্যতম সহযােগী।

গ্রেফতারকৃতরা বিগত প্রায় ২ বছর যাবত নানাবিধ কৌশলে জিম্মি, ব্লাকমেইল ও প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারী-পুরুষদের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে। তারা সাধারণত সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সাথে সখ্যতা গড়ে তােলে কৌশলে বিভিন্ন সময়ের আপত্তিকর ছবি/ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমদের হেনস্থা ও ব্লাকমেইল করে থাকে বলে জানান তিনি।

মঈন বলেন, এই ধরনের অপকর্মের জন্য তারা ভাড়াকৃত বাসা ব্যবহার করে থাকে। যেখানে জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিওগুলাে ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হতাে। এছাড়া অনলাইনেও ভিকটিমদের ফাঁদে ফেলে থাকে। গ্রেফতারকৃতরা নিজেদেরকে ভূয়া সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতাে।

গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, কিছুদিন পূর্বে সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত সাদমান আফিফরিশুর পরিচয় হয়। ওই পরিচয়ের সূত্রে গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা এলাকার (বসুন্ধরা) একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী একটি রেস্টুরেন্টের সামনে রিশুর সাথে ভিকটিমের সাক্ষাত হয়। অতঃপর সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে ভিকটিমকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াকের ভাড়াকৃত বাসায় নিয়ে গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াক, নিরা ও রিও জোরপূর্বক ভিকটিমকে মারধর, শ্লীলতাহানী ও যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করে।

এসময় তারা ভিকটিমরে সাথে থাকা মােবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং ১ লক্ষ টাকা দাবী করে বলে জানান তিনি।

পিবিএ/জেডএইচ

আরও পড়ুন...