আমরণ অনশন ভাঙছেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা!

নানা চাপে অনশন ভাঙার আভাস দিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেলে শাবির গোল চত্বরে মুক্ত আলোচনায় এ ইঙ্গিত দেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের অনশনরত সহপাঠীরা অনেক কষ্টে আছেন। টানা ১৩৬ ঘণ্টা না খেয়ে প্রায় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের হাতে স্যালাইন দেওয়ার জন্য ক্যানেলা বসানোর জায়গা নেই। তারপরও তারা অনশন ভাঙতে নারাজ। কিন্তু এমন অবস্থায়ও এই ভিসি তার পদ আকঁড়ে ধরে রেখেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা আমাদের সহপাঠীদের হারিয়ে ফেলবো কিন্তু এই নির্লজ্জ লোকটি তার চেয়ার ছাড়বে না। আমাদের সহযোদ্ধাদের বাঁচাতে আমরা অনশন ভাঙতে পারি তবে সে প্রস্তাব অনশনকারীদের দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মেডিকেল সাপোর্ট সরিয়ে নিয়েছে, ক্যান্টিন বন্ধের পর মঙ্গলবার থেকে ক্যাম্পাসের ফুড কোর্ট ও টং দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। যারা আমাদের রান্না করে খাওয়ায় তাদেরকে চাপ দিয়ে আসতে দিচ্ছে না। এছাড়া আমাদের সাবেক সাস্টিয়ানরা আমাদের অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করায় তাদেরকেও আটক করেছে। সবমিলিয়ে তারা আমাদের নানা চাপে রাখার চেষ্টা করছে।

এ সময় সব শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা অনশন ভাঙলেও ভিসির বাসভবনের সামনে থেকে সরবো না। যতদিন না সে পদত্যাগ করবে ততদিন আন্দোলন চলবে।

এর আগে ভিসি পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। মঙ্গলবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের খাবার ও টং দোকান। ফলে ক্যাম্পাসে এখন পানিও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

তাছাড়া আন্দোলনকারীদের ৩টি বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে গেছে। ওই অ্যাকাউন্টে খাবার ও আনুষঙ্গিক খরচের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা আর্থিক সহায়তা পাঠাতেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে সোমবার থেকে অ্যাকাউন্টগুলোতে কোনো লেনদেন করা যাচ্ছে না। সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে বিকাশের কল সেন্টারে যোগাযোগ করলেও কোনো সদুত্তর পাননি।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আর্থিক সহযোগিতার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ৫ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার ঢাকা থেকে তাদের আটক করে সিআইডি। মঙ্গলবার তাদেরকে সিলেটে পাঠানো হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদেরকে সিলেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে করোনা ঝুঁকির কথা জানিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সেবা দেওয়া থেকে মেডিকেল টিম প্রত্যাহার করেছে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাত্রলীগ। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দলটি সোমবার গভীর রাত থেকে নিজেদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা শাবির অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলেন।

মেডিকেল টিমের সমন্বয়ক ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, অনশনকারীদের অনেকেরই করোনার উপসর্গ আছে, কিন্তু তারা টেস্ট করাতে রাজি হচ্ছেন না। সেভাবে স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। এতে আমরা ঝুঁকিতে পড়ছি। আমাদের অনেককেই আবার হাসপাতালে ফিরতে হয়। ফলে অন্যরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন।

আরও পড়ুন...