মো.দীন ইসলাম,ঢাকা: গভীর রাতে কল দিয়ে কিছুটা নিস্তব্ধ থেকে সালাম বিনিময় করে শুরু হত প্রতারণা। যদি তাদের কথামত চলে তবে, মিলবে স্রষ্টার শান্তিও। এভাবেই লাখ টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী অভিযান করে এ চক্রের মূলহোতা মো.লুৎফর রহমান(২৬), আ.গাফফার(৩০) ও মো.শামীম(২৬) নামক তিনজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এসময় তাদের কাছ থেকে ৫ টি মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন অপারেটরের একাধিক সীমকার্ড জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিআইডি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার, মুক্তা ধর পিপিএম-বার।
তিনি বলেন, এই চক্রটি অনলাইন প্লাটফর্ম সহ ক্যাবল নেটওয়ার্কের লোকাল চ্যানেলের বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করা, দাম্পত্য কলহ দূর করা, বিবাহের বাধা দূর করা, চাকরিতে প্রমোশন, কম দামে স্বর্ণ ক্রয়,বদ জ্বীনকে বিতাড়িত করাসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞাপন প্রদান করত।
এছাড়া সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ যোগাযোগ করলে ভিন্ন কন্ঠে কথা বলে নিরীহ সরলমনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে তাদের কথা অনুযায়ী কাজ না কাজ করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করত। জিনের বাদশা সেজে এই প্রতারক চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন যাবৎ সক্রিয় ছিল বলে জানান তিনি।
এই চক্রটি পুরুষ হইলে টাকা পয়সা চাইতো আর নারী হলে স্বর্ণালঙ্কার চাইতো।এছাড়া মানুষের অপূরণীয় চাহিদা পূরণে তারা কাজ করতো। এর বিনিময়ে তারা রকেট বিকাশ এবং রকেটের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করত। সিআইডি জানান একজন ভিটকটিম থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আরকেজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে গত ৬ মাসে আনুমানিক অর্ধ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে।
এমন চক্রের চক্রান্তের বিষয়টি সিআইডি’র দৃষ্টিগোচর হলে, এই প্রতারক চক্রের মূল উৎপাটনের লক্ষ্যে সম্ভাব্য সকল তথ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এলআইসির একটি চৌকস টীম গাইবান্ধা জেলায় অভিযান পরিচালনা করে কথিত ‘জ্বীনের বাদশা’ চক্রের মূল হোতা মো. লুৎফর রহমান, আঃ গফ্ফার, মো. শামীম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণা করে বিভিন্ন লোকজনের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদেরকে সর্বশান্ত করার বিষয়টি স্বীকার করে।