‘বাবা তুই আমাদের ক্ষমা করিস’

পিবিএ, ঢাকা : পুরান ঢাকার চকবাজারের এই আগুন যে কতটা নির্মম তা জানে রোহানের মা-বাবা। তাইতো মরদেহ নয় পুড়ে কয়লা হওয়া সন্তানের একটুখানি দেহাবশেষ খুঁজে ফিরছেন তারা। মর্গে এসেও যদি ছেলের লাশ মিলতো তবুও কিছুটা হলেও শান্তনা মিলতো তাদের। সেই কুল না হওয়ায় এখন ভরসা সিআইডির ডিএনএ রিপোর্ট। তাইতো ডিএনএ নমুনা দিতে সকাল থেকেই মর্গের সামনে সিআইডি’র বিশেষ সেলে বসে আছেন তারা।

মায়ের হাত থেকে একবার বাবা, আবার বাবার হাত থেকে মা-নিখোঁজ ছেলের ছবি নিয়ে আহাজারি করছেন। ছেলে হারা এই বাবা মায়ের আর্তনাদ দেখে নিজের অজান্তেই চোখ ভিজিয়ে ফেলছেন মর্গে আসা অনেকেই। ছেলের লাশ সনাক্ত করার জন্য এই বাবা মায়ের শরীর থেকে ডিএনএ নমুনা হিসেবে নেওয়া হবে রক্ত। তারপর তা পাঠানো হবে সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবে।

দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে কথা হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্র তানজিল হাসান রোহানের স্বজনদের সাথে। তার মা বাবার সাথে কথা বলতে গেলেও তাদের মানসিক অবস্থা দেখে পিছু হাটতে হয়।

নিহত রোহানের চাচা আলমগীর খান বলেন, ৪ ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলো রোহান। বাবা হাসান খান বঙ্গবাজারে কাপড়ের ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি চাঁদপুর হাজীগঞ্জ উপজেলার শেখদি গ্রামে। পুরান ঢাকার আব্দুল হাদি লেনের ৩৯/২ নম্বর ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। রাতে নিজের মোটর সাইকেল নিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চুড়িহাট্টা ওই ভবনের সামনে গিয়েছিলো। তবে সেখান থেকে আর বাসায় ফিরতে পারেনি সে।

কথা বলতে বলতেই চোখের পানি ছেড়ে দেন চাচা আলমগীর। তিনি বলেন, ‘মোটর সাইকেলসহ আমার বাবা পুড়ে মারা গেছে। এমন পুড়া পুড়ছে, এখন আমার বাবার লাশটাও চিনতে পারছি না। মরার আগে কত কষ্টই না হয়ছে ওর। বাবা তুই আমাদের ক্ষমা করিস!’

পিবিএ/এইচএ/জিজি

আরও পড়ুন...