গাইবান্ধা সরকারি শিশু পরিবারের নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেই

মোঃ রিফাতুন্নবী রিফাত,গাইবান্ধা: দীর্ঘ ৯ বছর ধরে গাইবান্ধা সরকারি শিশু পরিবারের (বালক এতিমখানা) আবাসিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হলেও নতুন ভবন নির্মাণের কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে আবাসন সংকটে এক-একটি কক্ষে গাদাগাদি করে তিন থেকে চারজন এতিম শিশুকে থাকতে হচ্ছে। এতে করে চরম অস্বস্তিতে থাকায় পড়াশোনা ও স্বাস্থ্যগতসহ নানান সমস্যায় ভুগছে এতিম শিশুরা।

গাইবান্ধা সরকারি শিশু পরিবার (বালক) সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের প্রফেসর কলোনীতে এতিম শিশুদের থাকার জন্য দুই তলাবিশিষ্ট একটি আবাসিক (ডরমেটরি) ভবন নির্মাণ করা হয় ১৯৭৪ সালে। ১০০ আসনবিশিষ্ট এই শিশু পরিবারে এতিম শিশু রয়েছে ৭৯ জন। ২০১৩ সালের ৫ জুন তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. কাজী আনোয়ারুল হকসহ গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর এতিম শিশুদের স্থানান্তর করা হয় পাশের দুইটি টিনশেড ঘর ও কার্যালয় ভবনের বিভিন্ন কক্ষে। বর্তমানে আবাসন সংকটে এক কক্ষেই তাদেরকে তিন থেকে চারজন পর্যন্ত গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। সূত্রটি আরও জানায়, গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়ক উঁচু করে নির্মাণ করায় প্রতিষ্ঠান চত্তরে নিচু হয়ে গেছে। এজন্য বর্ষাকালে রাস্তার সমস্ত পানি পুরো প্রতিষ্ঠান চত্তরে জমে সবাইকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠানটিতে মাটি ভরাট করে উঁচু করতে হবে।

আবাসিকে থাকা কয়েকজন এতিম শিশু জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবনে থাকার সময় ভয় লেগেছে। কখন যে ভেঙে পড়বে সেই আশংকায় থাকতাম। এখন সেই সমস্যা না থাকলেও বর্তমানে আরেক সমস্যায় আছি। এক কক্ষেই তিন থেকে চারজন পর্যন্ত থাকতে হচ্ছে। এতে করে পড়াশোনায় মনোযোগে পড়ছে না। একজন অসুস্থ্য হলে অন্যরাও অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। ফলে নানান সমস্যায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে সবাইকে। সেই সাথে আয়রনযুক্ত পানি পান ও ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জোড়দাবী জানায় এতিম শিশুরা।

গাইবান্ধা সরকারি শিশু পরিবারের (বালক) উপতত্ত্ববধায়কের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পলাশবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সুফিয়ান বলেন, প্রায় ৯ বছর ধরে একেক কক্ষে তিন থেকে চারজন করে এতিম শিশুকে কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে। তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা দরকার।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, ১২টি জেলায় চারতলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এই তালিকায় রংপুর ও গাইবান্ধার নাম রয়েছে। এই নতুন ভবন নির্মাণ কাজের প্রকল্প চলতি অর্থবছরেই ধরানো হবে বলে জানতে পেরেছি। আর সেটি এবারও না হলে এতিম শিশুদের আরও দীর্ঘদিন কষ্টে দিনাতিপাত করতে হবে।

আরও পড়ুন...