রমজানে ইতেকাফের উদ্দেশ্য ও শর্ত

আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম ইতেকাফ। রমজান ও রমজানের বাইরে ইতেকাফ করা যায়। কিন্তু রমজানে ইতেকাফের রয়েছে সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য। আর তাহলো লাইলাতুল কদর পাওয়া। কদিন পরেই শুরু হবে ইতেকাফের সময়। ইতেকাফের জন্য রয়েছে কিছু শর্ত। ইতেকাফের উদ্দেশ্য ও শর্ত জেনে নেয়া জরুরি।

রমজানের ইতেকাফ
ইতেকাফ শব্দটি আরবি। এর অর্থ হচ্ছে- অবস্থান করা, স্থির থাকা বা আবদ্ধ থাকা। ইসলামি শরিয়েতের পরিভাষায় রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান ইফতারের আগেই মসজিদ কিংবা ঘরের নির্ধারিত নির্জন স্থানে অবস্থান গ্রহণ করা। দুনিয়ার সব প্রয়োজন থেকে মুক্ত হয়ে শুধু আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেকে আত্মনিয়োগ করাই হলো ইতেকাফ।

ইতেকাফের উদ্দেশ্য
দুনিয়ার যাবতীয় কাজ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে একনিষ্ঠতা ও একাগ্রতার সঙ্গে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হওয়া, বিনয় ও নম্রতায় নিজেকে আল্লাহর দরবারে সমর্পণ করা এবং বিশেষ করে লাইলাতুল কদর পাওয়ার একান্ত কামনা-বাসনা নিয়েই নিজেকে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত করাই হলো ইতেকাফের মূল উদ্দেশ্য।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যতদিন দুনিয়ায় জীবিত ছিলেন, ততদিন রমজানের শেষ ১০ দিন মসজিদে ইতেকাফ করেছেন। জীবনে জীবিত থাকাকালীন কোনো রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ বাদ দেননি।’ (বুখারি)

ইতেকাফের শর্ত
রমজানে ইতেকাফের জন্য রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত৷ আর তা হলো-
* ইতেকাফের নিয়ত করা৷ নিয়ত ব্যতিত ইতেকাফ বিশুদ্ধ হবে না৷
* ইতেকাফ মসজিদে হওয়া। পুরুষরা মসজিদে আর নারীরা ঘরের নামাজের স্থান অথবা নির্ধারিত স্থানে ইতেকাফ করা৷ যদি জুমআ মসজিদ না থাকে তবে পাঞ্জেগানা মসজিদে ইতেকাফ করা৷
* রমজানের ইতেকাফে রোজা রাখা৷ এমনকি ওয়াজিব ও অন্যান্য সুন্নাত ইতেকাফের জন্যও রোজা রাখা শর্ত৷
* ইতেকাফকারী মুসলমান হওয়া৷
* বিবেকবান তথা জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া৷
* নারীদের হায়েজ (মাসিক) ও নিফাসসহ (সন্তান ভূমিষ্টের পর ৪০ দিন) বড় নাপাকি থেকে পবিত্র হওয়া৷

যারা ইতেকাফের চিন্তাভাবনা করছেন, তাদের জন্য ইতেকাফের প্রস্তুতির এখনই সময়। ইতেকাফের প্রস্তুতির আগে ইতেকাফের উদ্দেশ্য ও শর্ত জেনে প্রস্তুতি গ্রহণ করাই শ্রেয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইতেকাফের উদ্দেশ্য ও শর্তগুলো জেনে ইতেকাফের প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরও পড়ুন...