ওহি আলম, পিবিএ,নোবিপ্রবি: আচার্যকে বরণ করে নিতে কোন কমতি রাখছে না নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির দ্বিতীয় সমাবর্তন আগামীকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বহুল প্রত্যাশিত এই সমাবর্তনকে ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
এবারের সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক,আচার্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চ ও প্যান্ডেলের নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্যান্ডেলের ভিতরের কাজও চলছে জোর গতিতে। এদিকে, প্রশাসনিক ভবন, বঙ্গবন্ধু চত্বর, ফাউন্টেনপেন, আকাশমনির হাট , বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মো. ইদ্রিছ অডিটোরিয়াম, দুই একাডেমি ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, হলসহ বেশ কয়েকটি ভবন রঙ তুলির আঁচড়ে রঙিন হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ভবন ও এর আশপাশে চলছে পরিচ্ছন্নতা ও শোভাবর্ধনের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে হল পর্যন্ত সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলছে পুরোদমে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ও সোনাপুর থেকে ক্যাম্পাসগামী রাস্তাগুলোরও মেরামত কাজ চলছে। এছাড়াও সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সদ্য শেষ হওয়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দুটি উদ্ভোধনের কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতির। সমাবর্তন ঘিরে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসন।এদিকে সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তৎপর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডিসহ প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতরে নিরাপত্তার স্বার্থে ভাসমান খাবার
দোকানগুলো সমাবর্তনের দিন পর্যন্ত বন্ধ রাখার নিদের্শ দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের সমাবর্তনে ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জনকারীদের মোট দুই হাজার চারশত চুয়াত্তর জন গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করেছেন। এদিকে এবারের সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন একুশে পদক প্রাপ্ত প্রফেসর ও বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড.অনুপম সেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সমাবর্তন কমিটির আহবায়ক ড. এম ফারুক উদ্দিন বলেন, সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনসহ একাডেমিক ভবনগুলো রঙ করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি আরো জানান, সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তিনি সকলকে সেসকল অপপ্রচারে কান না দেবার জন্য অনুরোধ জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর(ভারপ্রাপ্ত) সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ রোকোনুজ্জামান বলেন, মহামান্যর আগমনকে ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সমাবর্তনের দিন ক্যাম্পাস জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোন ধরনের ব্যতয় না ঘটে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে পুরো ক্যাম্পাস পরিনত হয়েছে ছোট-বড়, নতুন-পুরানের মিলন মেলায়। শিক্ষার্থীদের মাঝে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের জোয়ার। সবাই যে ব্যস্ত প্রিয় গাউন পরে নানা আংগিকে, নানা ভংগিমায় ছবি তুলতে। কেউ গাছে উঠে হনুমান সাজছে তো কেউ রাধুনি হচ্ছে। কেউবা তার প্রিয়তমাকে নিয়ে ঘর বাধার আশা বুনচ্ছে। সমাবর্তন নিতে আশা শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক বছর পর ক্যাম্পাসে এসে মনের ভিতর যেন এক অন্য রকম আনন্দের বাতাস বইচ্ছে। বন্ধুবান্ধব সবাইকে পেয়ে, ফিরে যাচ্ছি পুরানো সেই দিনগুলোতে। উল্লেখ্য, সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় এবারের সমাবর্তনে থাকচ্ছেন না নোবিপ্রবির আট মেধাবী শিক্ষার্থী। সিএসটিই ২০০৯-১০ সেশনের সাজ্জাদ হোসাইন ও
২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী তানভীর মাহমুদ সিদ্দিকী, ফার্মেসি ২০১১-১২ সেশনের আবু নাসের, ফিমস ২০১১-১২ সেশনের মহসিন ফরহাদ, এফটিএনএস ২০১১-১২ সেশনের মাহফুজ জনি, ফার্মেসি ২০১২-১৩ সেশনের ফৌজিয়া মোসলেম, এগ্রিকালচার ২০১৩-১৪ সেশনের সাইদুর রহমান মামুন এবং ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের নিশান চাকমা। তাদের শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি আমরা।
পিবিএ/ওএ/জেডআই