প্রশাসনের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষোভ বন্ধ করে হলে ফিরেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হল থেকে রান্নার সরঞ্জাম সরানোর নির্দেশনা বাতিলসহ কয়েকটি দাবিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অপরাজিতা হলের একদল ছাত্রী বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন।
বিক্ষোভরত ছাত্রীরা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো— হলে রাইস কুকার ও রান্নার সরঞ্জামাদি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌন হয়রানির প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগত আক্রমণের জন্য প্রাধ্যক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে, হলে প্রয়োজনে অভিভাবক ও নারী আত্মীয়দের থাকার অনুমতি দিতে হবে, হলে পানি ও খাবারের সমস্যার সমাধান করতে হবে, হল প্রাধ্যক্ষ তাঁর নিজ ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) ছাত্রীদের ডেকে ব্যক্তিগত ও একাডেমিক বিষয়ে হয়রানি করতে পারবেন না, হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং হলের ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা হলের এক ছাত্রী তরকারি কাটার বটি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি বেঁচে যান। ওই ঘটনার পর হলে ছাত্রীদের রান্নার সরঞ্জাম জব্দ করার নিদের্শ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। ইলেকট্রনিক সরঞ্জামসহ রাইস কুকার, হিটারও সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। নোটিশে বলা হয়, যাঁর কক্ষে এসব সরঞ্জাম পাওয়া যাবে তাঁর সিট বাতিল করা হবে।
এ নিয়ে ছাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এর জের ধরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অপরাজিতা হলের একদল ছাত্রী ফটকের তালা ভেঙে বাইরে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব হলের ছাত্রীরা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ছাত্র হলের শিক্ষার্থীরাও ওই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ছাত্রীদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হলের প্রাধ্যক্ষ, সহকারী প্রাধ্যক্ষরা ছাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধমক দিয়ে কথা বলেন। কারণে অকারণে সিট বাতিলের হুমকি দেন।
ছাত্রীরা বলেন, কিছু দিন আগে ফেসবুকে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৪৫ মিনিট ধরে বকাঝকা করেন হল প্রাধ্যক্ষ। এ ছাড়া বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে সেই সমস্যা সমাধান না করে উল্টো শাসানো হয়। এসব কারণে বেশ কিছু দিন ধরে অপরাজিতা হলের ছাত্রীরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। সর্বশেষ রান্নার সরঞ্জাম ও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সরানোর ঘোষণায় তাঁরা ফুসে উঠেছেন।