পিবিএ,নোয়াখালী: নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলার হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে টর্নেডোর আঘাতে বিধ্বস্ত ঘর বাড়ির তিন শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। গত ২৪ ঘন্টায়ও সরকারী বেসরকারী ভাবে কোন ত্রাণ সামগ্রি পৌঁছেনি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে। এদিকে ৩টি মাছ ধারার নৌকাসহ নিখোঁজ ১০ জেলে ও স্পিডবোর্ড ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৭ নৌ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলেরা।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামের বাসিন্ধা মো: রাকিব জানান, সোমবার সকালে নিঝুমদ্বীপের আদর্শ গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে আকস্মিক টর্নেডো আঘাত হানে। এতে দ্বীপের আড়াই শতাধিক কাঁচা-আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়। এ সময় বিধ্বস্ত ঘর ও উপড়ে পড়া গাছের ডাল পালার আঘাতে অন্তত ৫ জন আহত হয়। দুপুরে একই ভাবে আঘাত হানে টর্নেডো। এতে অর্ধশত ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। নষ্ট হয়েছে কয়েক হাজার মন সুকনো সুটকি।
টর্নেডোর সময় নদীতে ৩টি নৌকাসহ নিখোঁজ ১০ জেলেকে সন্ধায় প্রশাসনের লোকজন নদীর মোহনা থেকে উদ্ধার করেছে।
এছাড়া সকালে হাতিয়ার তমরদ্দিঘাট থেকে চেয়ারম্যান ঘাটে আসার পথে ধান বোঝাই একটি ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে ডুবে যায়। এ সময় অন্য একটি ট্রলারের সহযোগীতায় ডুবন্ত ট্রলারে থাকা লোকজন নিরাপদে তীরে ফিরতে সক্ষম হয়।
এদিকে তমরদ্দি ঘাটের কোস্টগার্ড রেজিস্ট্রেশন অফিসার অনিক জানান, সোমবার সকালে ভাসানচর এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় ৭ নৌ কর্মকর্তাকে বহনকারী একটি স্পিডবোট। দুপুরে ভাটিয়ারি এলাকায় স্থানীয় জেলেরা তাদের উদ্ধার করে। এরপর তাদের ৬ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ও গুরুতর একজনকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেরাজ হোসেন জানান, টর্নেডোয় পুরো নিঝুমদ্বীপ লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অধিকাংশ বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাছাড়া ঝড় ও বৃষ্টিতে সুটকি পল্লীতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টর্নেডোর ২৪ ঘন্টা পরও এলাকায় সরকারী বা বেসরকারী ভাবে কোন ত্রাণ সামগ্রি পৌঁছেনি বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান মেহেরাজ হোসেন।
মঙ্গলবার সকালে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর এ আলম জানান, টর্নেডোর পর আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানিয়েছি। সরকারী ভাবে এখনো কোন বরাদ্ধ আসেনি। বরাদ্ধ আসলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
পিবিএ/ওয়াইই/ এফএস