রাজধানীর তেঁজগাও পশ্চিম নাখালপাড়ায় স্ত্রীকে বিষপানে হত্যার ঘটনায় স্বামী ও প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে তেঁজগাও থানা পুলিশ স্বামী সালামকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকা ও প্রেমিকা শিরিনকে রাজধানীর তেঁজগাও শিল্পাঞ্চল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে শ্যামলীতে ডিএমপি’র তেঁজগাও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ঘাতক সালাম ও নিহত স্মৃতির ৯ মাস আগে বিয়ে হয়। তাদের দুজনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরে উপজেলায়। পারিবারিকভাবে বিয়ের আগে শিরিন নামের অপর এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলো। এই শিরিন সালামের মামাতো বোন। তাদের প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে জিদের বসে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছু দিন সালাম ও শিরিনের পরকীয়া সম্পর্ক শুরু হয়। সালাম ও শিরিন দুজন একই বিস্কুট কারখানায় কাজ করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় বৃষ্টিকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সালামের বাসার আরেক ভাড়াটিয়া কথিত জিনের মা বৃষ্টির কাছ থেকে দুধে মন্ত্র পড়িয়ে এনে স্মৃতিকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এ জন্য সালাম দুই বোতল দুধ কিনে এনে বৃষ্টির বাসার ফ্রিজে রাখে। পরে সালাম ও শিরিন পরিকল্পনা বদলে দুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয়। সেই দুধ স্মৃতিকে পান করায় সালাম। এরপর সালাম বাসায় অসুস্থ স্ত্রীকে রেখে কাজে চলে যায়। পরবর্তীতে সালামের স্ত্রী স্মৃতি অসুস্থ হয়ে পরলে তার খবর পেয়ে নিহত স্মৃতির বাবা ও সালামের ভাবী নাজমা এসে অসুস্থ অবস্থায় স্মৃতিকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় স্মৃতি।
তেজগাঁও বিভাগের ডিসি আরও জানান, এই ঘটনায় নিহত স্মৃতির বাবা মো. কামাল মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সালামকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকন হাট এলাকা থেকে ও প্রেমিকা শিরিনকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার নাবিস্কো এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া কথিত জিনের মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
