দূর্গাপূজা ও ছুটির দিনে কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের ভীড়

উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া (পটুয়াখালী): পর্যটকে মুখরিত সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। সমুদ্রের নোনা জলে নেচে গেয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছে পর্যটকরা। দূর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিতে শুক্রবার সকাল থেকে এসকল পর্যটকের আগমন ঘটে। আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। দক্ষিনের উষ্ণ নির্মল বাতাস, সাগরের নীলজলরাশি। আর সৈকতের লাল কাকড়ার অবাধ বিচরনের এ যেন অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এসব দৃশ্য উপভোগ করতে পেরে অনেকেই মুগ্ধ। কেউ সেল্ফি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রকৃতি।

এদিকে পর্যটকদের আবাসন সুবিধা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হোটেল-মোটেল মালিকরা। তবে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও মহিপুর থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, আগের তুলনায় পর্যটকের উপস্থিতি অনেকটা বেড়েছে। কুয়াকাটার কুয়া, সৈকতের লেম্বুরবন, গঙ্গামতির লেক, লাল কাঁকড়ার চর, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে দেখছেন পর্যটকরা। থেমে নেই সৈকতে ফটোগ্রাফার ও ঘোঁড়ার দৌড়। আবার আনেকেই সৈকতের দোকানগুলোতে কাঁকড়া, চিংড়িসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই ও বার-বি-কিউ উপভোগ করছেন। এছাড়া ফুচকা চটপটির দোকান গুলোতেও ভীড় লেগে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়িরা জানান, আগে ফেরি পার হয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে কুয়াকাটায় যেতে সময় লাগতো ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা। এখন পদ্মা সেতু চালু হয়েছে,আর সেই ভোগান্তিও কমেছে। মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে এখানে আসা যায়। তাই ভ্রমন পিপাসুরা কুয়াকাটাকেই বেছে নিয়েছেন।

সৈকত লাগোয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো.মধু হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটক আসতে শুরু করেছে। তাই বেচা বিক্রিও বেড়ে গেছে। তবে সরকারি ছুটি কিংবা বিশেষ কোন দিনে পর্যটক বেশি থাকে।

পর্যটক আরিফিন ফয়সাল বলেন, এর আগেও কুয়াকাটা এসেছি। তখন বেশ কয়েকটি ফেরি পার হয়ে এখানে আসতে হতো। তখন অনেক বিলম্বনার শিকার হতে হয়েছে। এবারে মাত্র ৬ ঘন্টায় কুয়াকাটা আসলাম। হোটেলে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়ে সৈকতে বেড়িয়ে পরেছি। ঘুরে দেখলাম বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট। অপর এক পর্যটক সবুজ শিকদার বলেন, কুয়াকাটা হলো আমার প্রিয় একটি স্থান। তাই ছুটি পেলেই বার বার এখানে ছুটে আসি।

হোটেল গোল্ডেন ইন কুয়াকাটা এর স্বত্তাধিকারী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, দূর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। আমাদের হোটেলের সবকটি রুম বুকিং হয়েছে গেছে। এখনও পর্যটকরা অনলাইনে কিংবা ফোনে বুকিং করছেন।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সাপ্তাহিক ছুটিসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকের আগমন বেশি হচ্ছে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরিফ বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটার ভাগ্য ফিরেছে। টানা লম্বা ছুটিগুলোতে পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। আমরা আগত পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

মহিপুর থানা ওসি খোন্দকার মো. আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আঃ খালেক জানান, পর্যটক সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় দিতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

আরও পড়ুন...