পিবিএ, ঢাকা– রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের বিচার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বুধবারও বিক্ষোভ করছেন অভিভাবকরা ও শিক্ষার্থী। সকাল থেকে রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের প্রধান ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথে নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকরাও যোগ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে।
শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার না হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এ ছাড়া কলেজ অধ্যক্ষ ও শাখাপ্রধানের পূর্ণ বরখাস্ত, গভর্নিং বডি বাতিল চেয়েছে তারা।
গত রোববার পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী(১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিস্কার করা হয়। এর পর তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। উপাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে তারা গেলে তিনিও তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে অরিত্রি অধিকারীকে ছাড়পত্র দেওয়ার হুমকি দেন। নিজের সামনে বাবা-মায়ের এমন অপমান সইতে না পেরে ওই দিন দুপুরে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী অভিভাবকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে ভিকারুননিসা ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিক্ষোভের মধ্যেই অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি করেছে। পাশাপাশি হাইকোর্টও এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে তার বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করেছেন। ৩০৫ ধারার এই মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিন্নাত আরা এবং অরিত্রির শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে আসামি করা হয়েছে।
পিবিএ/এমটি/এইচএইচ