নাজমুল হুসাইন, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পালিত হয়েছে বৌদ্ধধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। রোববার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় সংলগ্ন ক্রিকেট মাঠে বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ফানুস উড়ানোর মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালিত হয়।
জানা গেছে, বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী, আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত শুরু হয়ে এ পূর্ণিমাতে শেষ হয়। মহামতি গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি পালন করে আসছেন। আত্মশুদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের আয়োজন হলো প্রবারণা। আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধ ‘বুদ্ধত্ব’ লাভের পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা উৎসব পালন করেন। এই শুভতিথিতে ভগবান বুদ্ধ দেবলোক থেকে সাংকশ্য নগরে অবতরণ করেছিলেন। ভিক্ষুদের ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রতাদিও সম্পন্ন হয় আজকের দিনে।
কথিত আছে, এই তিথিতে গৌতম বুদ্ধ ৬০ জন প্রশিক্ষিত শিষ্যকে ধর্ম প্রচারণার জন্য বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেন এবং তাদের বলেন, ‘চরত্থ ভিকখবে চারিকং, বহুজন হিথায় বহুজন সুখায়’- অর্থাৎ, তোমরা বহুজনের হিতের জন্য, বহুজনের সুখের জন্য চারিদিক ছড়িয়ে পড়ো।
এ বিষয়ে জুম্ম ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিশাল চাকমা বলেন, আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাসের জন্য বর্ষাবাস ব্রত নেন এবং তিন মাস পর এই প্রবারণা পূর্নিমা তিথিতে বর্ষাবাস সমাপ্ত করেন। তারপরের দিন থেকে শুরু হয় অন্যতম ধর্মীয় প্রধান উৎসব কঠিন চিবরদান। এই দিনটি আমাদের জন্য অন্যতম একটা দিন। আমরা আমাদের ক্যম্পাসে এই দিনটি পালন করতে পেরে আনন্দিত।
প্রসঙ্গত, সংস্কৃত ‘পবারণা’ শব্দ থেকে প্রবারণা শব্দের আবির্ভাব। যার অর্থ হলো ‘আশার তৃপ্তি’ ‘অভিলাষ পূরণ’ শিক্ষা সমাপ্তি অথবা ধ্যান শিক্ষা সমাপ্ত। প্রবারণা বরণ অর্থে যা কিছু সুন্দর, সৎ, যথার্থ, বিজ্ঞজন সর্বোপরি বুদ্ধমোদিত সে রকম কাজকে বরণ করা এবং এগুলো নিজের জীবনে মেনে চলা। বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসীরা এগুলো মেনে চলার চেষ্টা করেন।