পিবিএ,ঢাকা: গত ৬ নভেম্বর রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বুড়িগঙ্গা নদীর আটিবাজারগামী শাখা নদীর পার হতে হাত-পা বাঁধা ও মুখমন্ডল কস্টেপ পেচানো অবস্থায় ১ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে মরদেহটি পিকআপ চালক সাকিবের বলে শনাক্ত করে তার চাচা। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের চাচা মোঃ জামাল(৩৭) অজ্ঞাতনামা আসামিদের আসামি করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় (মামলা নং-২৭/৬২২ তারিখঃ ০৭/১১/২০২২ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড) হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় র্যাব-২ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামি গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করে।
র্যাব-২’র একটি আভিযানিক দল দীর্ঘদিন এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মোঃ মিজানুর রহমানকে গত ২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে র্যাব-২।
গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে মোঃ মিজানুর রহমানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ৩ ডিসেম্বর উক্ত হত্যা মামলার আরেক অজ্ঞাত আসামি রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর আভিযানিক দল রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোঃ নাইমুল হোসেন ওরফে সিয়াম (২২)-কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, সে একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিতে চাকুরী করত। ২ মাস আগে তার চাকুরী চলে যায়। চাকুরি চলে যাওয়ার কারণে সে বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করত। এই ছিনতাইয়ের টাকার তার সংসার চলছিল না। তখন সে এবং তার আরও দুই বন্ধু (মোঃ মিজানুর রহমান) মিলে প্ল্যান করে একটি গাড়ি ছিনতাই করে সেটি গ্রামে বিক্রি করে যে টাকা আসবে সেই টাকা দিয়ে তারা একটি ব্যবসা করবে। পরবর্তীতে তারা রায়ের বাজার যায় এবং একটি গাড়ি ভাড়া করে ৫০০/- টাকা অগ্রীম দিয়ে চলে আসে। পরেরদিন তারা প্ল্যান মাফিক গাড়ির ড্রাইভার সাকিবকে মোবাইলে কল করে আরশিনগর আসতে বলে। গাড়ির ড্রাইভার সাকিব সেখানে গেলে তারা বলে আমরা মুন্সীগঞ্জ যাব। সাকিব মুন্সিগঞ্জ যেতে রাজি না হলে তারা তাদের রুমে ডেকে নিয়ে যায়। রুমে নিয়ে যাওয়ার পর কথাকাটাকাটির এক পর্যায় তারা সাকিবের হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং কালো কসটেপ দিয়ে তার মুখ ও মাথা পেচিয়ে ফেলে। এরপর রাত ১২ টার দিকে তারা নদীর দিকে নিয়ে গিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে পিকআপ ড্রাইভার সাকিবের হাত-পা বাধাঁ লাশ উদ্ধার করা হয়। আটককৃত আসামির দেওয়া তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্য আসামিকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।