মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তার ঘটনায় সরকার জড়িত: বিএনপি

রাজধানীর শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের যে অপরাজনীতি, তা থেকে বাংলাদেশের কেউ তো নয় বিদেশিরাও আজকে নিরাপদ নয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তার ঘটনায় সরকার জড়িত।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রিন্স বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ব্যাপক ক্ষুণ্ণ হবে। বাংলাদেশে যে আজকে গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই, মানবাধিকার নেই, এখানে যে অপশাসন চলছে সেটা আরও ফুটে উঠবে।

সরকারের মদদে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তা করা হয়েছে দাবি করে প্রিন্স বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে প্রমাণ করে এর সঙ্গে তারা জড়িত। তারাই উস্কানি দিয়ে, সেখানে লোক পাঠিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাবাহী গাড়িতে আঘাত করিয়েছে। রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তা করা হয়েছে। এর আগেরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গাড়িতে এই সরকারের নির্দেশে হামলা করা হয়েছে। এই কথা কেউ ভুলে যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুসহ আরও অনেকে।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে সুমনের বাসায় প্রবেশ করেন তিনি। প্রায় ২৫ মিনিট তিনি সেখানে অবস্থান করেন। এরপর তিনি ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যান।

সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় প্রায় ৪৫ বছর আগের গুমের ঘটনা ও সামরিক শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের কাছে স্মারকলিপি দেয় ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠন।

প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন দূত সেখানে যাবেন তা এই সংগঠনের সদস্যরা জানলেন কীভাবে, কে বা কারা তাদের সেখানে পাঠালেন?

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, কারাবন্দি বিএনপি শীর্ষ নেতাসহ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এমন ঘৃন্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদেরকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রাপ্য চিকিৎসার সুযোগসহ অন্যান্য সুযোগ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

সারাদেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। এখনো আমরা অনেক নেতা-কর্মীর খোঁজ পাচ্ছি না। প্রতিদিনই আমাদের কাছে গ্রেফতারের নতুন নতুন তালিকা আসছে। আমি আটককৃত সকল রাজবন্দীদের গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপি’র সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক বেলাল আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সদস্য (দফতরে সংযুক্ত) মোঃ আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

আরও পড়ুন...