পিবিএ,ঢাকা: বিগত ১৯৯৮ সালের জুন মাসে যশোর জেলার কোতয়ালি থানা এলাকায় মাছের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আসামি ১) সোহরাব হোসেন, ২) আশরাফ ৩) রেজাউল ইসলাম, ৪) তরিকুল ইসলাম, ৫) খোকন ঢালী সংঘবদ্ধ হয়ে ভিকটিম শুক্কুর আলীকে গুরুতর জখমসহ নৃসংশভাবে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে যশোর জেলার কোতয়ালি থানায় ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যাহা কোতয়ালি থানার মামলা নং ১০, তারিখ-০৪/০৬/১৯৯৮, ধারা- ৩০২/৩২৪/৩৪ পেনাল কোড।
উক্ত ঘটনায় দেশব্যাপি ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তৎকালীন ইলেকট্রনিক্স এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ডে ঘটনাটি দায়েরকৃত হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত সম্পন্ন করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় এজাহারনামীয় ৫ জন আসামির বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত উক্ত হত্যার ঘটনায় অবগত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও তথ্য প্রমাণ সহ দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ অতিঃ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০০২ সালে ১ নং আসামী সোহরাব হোসেন(৪৫), ২ নং আসামি আশরাফ, ৫ নং আসামী খোকন ঢালী’দের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২ জনকে খালাস প্রদান করেন। এদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১নং আসামি সোহরাব হোসেন (৪৫) মামলা রুজু হওয়ার পর হতে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপনে ছিল।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকাণ্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সোহরাব হোসেন (৪৫), পিতা- মুছাবির, থানা-কোতয়ালি, জেলা- যশোর’কে দীর্ঘ ২৪ বছর পর গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সোহরাব হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানান যে, উক্ত ঘটনার পর থেকে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য প্রথমে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ৪ বছর, মিরপুরে ৭ বছর, তেজগাঁও এ ৩ বছর এবং সাভারের জিরানীতে দীর্ঘ ১০ বছরসহ সর্বমোট ২৪ বছর বিভিন্ন পেশা ও বিভিন্ন নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপনে থাকত।
গ্রেফতারকৃত আসামি সোহরাব হোসেন (৪৫) উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এই ধরনের চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত দীর্ঘদিনের পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গ্রেফতারকৃত যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।