জাবির গ্রন্থাগারে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশে বাধা; শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

jabi

 

পিবিএ, জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ভিতরে ব্যাগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সকাল ৭ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। গতকাল রবিবার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হানিফ আলীর পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যেখানে উল্লেখ করা হয় ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ও গ্রন্থাগারের কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে গ্রন্থাগার ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যাগ নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে গ্রন্থাগারের ভেতরে প্রবেশ করবে এবং ইস্যুকৃত পুস্তক নির্দিষ্ট কাউন্টারে চেক করিয়ে প্রস্থান করবেন।’ এ রকম নির্দেশনা মানতে নারাজ গ্রন্থাগারে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়ম হঠাৎ করে বদলানো উচিত হয়নি। আর কোন ধরনের আগাম নোটিশ না দিয়ে একদিনের নোটিশে এমন নিষেধাজ্ঞা মানা যায় না। সিন্ধান্ত নেওয়া হলেও গ্রন্থাগারে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল কর্তপক্ষের। শিক্ষার্থীদের দাবি, সকাল ৭ টায় ব্যাগসহ গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে গেলে কর্মচারীরা তাদের বাধা দেয়। কারণ হিসেবে ব্যাগসহ গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানান কর্মচারীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী একাডেমিক ও চাকরির পড়াশোনার জন্য গ্রন্থাগারে আসেন। এ জন্য ব্যাগে করে বই নিয়ে যেতে হয়। হঠাৎ করে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় সব শিক্ষার্থীর ভোগান্তি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসির হামিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন গ্রন্থাগারে আসে পড়াশোনা করতে। কর্মচারীরা সকাল ৭ টায় ব্যাগ চেক না করে রাত ৯ টায় বের হওয়ার সময় চেক করলেই তো পারে। তাছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরাও আছে। গ্রন্থাগারের সম্পদ অরক্ষিত হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবেল খান বলেন, গ্রন্থাগারে লাইট, ফ্যান চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। উপর তলার টয়লেটের পানি নিচ তলায় চুয়ে গায়ে পড়ে সেদিকে প্রশাসনের কোন নজর নেই। চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে পড়াশোনা করছি। তুচ্ছ বিষয় সামনে এনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে।

জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাঈনুদ্দিন মাঈনু বলেন, গ্রন্থাগারে তীব্র আসন সংকট। আসন বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। অথচ গ্রন্থাগারের ভিতরে ব্যাগ রাখার তুচ্ছ বিষয় নিয়ে টালবাহানা করছে প্রশাসন। গ্রন্থাগারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ নেই। ব্যাগ নিয়ে ভিতরে প্রবেশে সমস্যা হলে লকার সিস্টেম করে দিলেই তো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিড়ম্বনা কমে যায়।

jabi2

এদিকে সোমবার দুপুর ১২ টায় গ্রন্থাগারের সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে এবং সুনিদিষ্ট দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের সাথে দেখা করতে যান শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যর একটি দল। গ্রন্থাগারের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হানিফ আলী বলেন, ‘গ্রন্থাগারের সার্বিক বিষয় চিন্তা করে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এমন সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী ব্যাগে এক গাদা বই নিয়ে এসে জায়গা দখল করে রেখে যায়। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। গ্রন্থাগারের জায়গা সবার জন্য। একজন শিক্ষার্থী ব্যাগ দিয়ে আগাম জায়গা দখল করে রাখতে পারে না। তাছাড়া গ্রন্থাগার হচ্ছে বর্তমান শিক্ষার্থীদের পড়ার জায়গা। এখানে সাবেক শিক্ষার্থীরা আসেন তাদের চাকুরির পড়াশোনা করতে। আমাদের ক্যাম্পাসে সবার মধ্যে ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে বলে সেটা আমরা বিবেচনা করি। কিন্তু এটা তো সমাধান নয়। তাই গ্রন্থাগারের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পিবিএ/জিজি

আরও পড়ুন...