‘ভিন্নমতের ওপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করছে সরকার’

বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার ভিন্নমতের মানুষের ওপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করছে। নওগাঁয় কোনো মামলা ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক নারী মারা গেলেন। ঢাকার সাভারে প্রথম আলোর সাংবাদিক সত্য কথা লেখায় তাঁকে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসবের অর্থ হচ্ছে, একটি ভয়ংকর সমাজ কায়েম করা হয়েছে। দেশে কোনো মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সভায় বিএনপির নেতারা এসব অভিযোগ করেন। ‘নওগাঁয় সুলতানা জেসমিনকে হত্যা ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের’ প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম। এ সংগঠনের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকার দেশ চালাচ্ছে। তারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। সরকার কোনো আইনকানুনকে তোয়াক্কা না করে কঠিন অবস্থার সৃষ্টি করেছেন।

নওগাঁয় র‍্যাবের ‘হেফাজতে’ সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর তাঁর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এর থেকে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশে কী পরিমাণ অরাজকতা চলছে।

সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, তাঁর নামে মামলা ছিল না। তাঁকে রাতের আঁধারে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ১৯ ঘণ্টা পর মামলা হয়। এসব ‘স্বৈরাচারী’ আচরণ।

খন্দকার মোশাররফ প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি দাবি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, এ সরকারের সময়ে সাগর-রুনি হত্যা, ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলম, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়েছিল। এর মধ্যে লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মারা গেছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিতের আহ্বান জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করে সেলিমা রহমান সাংবাদিক শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তি ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সভা সঞ্চালনা করেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম সদস্যসচিব নিপুন রায়। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির সহ-সভাপতি আহমেদ আজম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সহসম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

আরও পড়ুন...