যে খাবারগুলো কখনোই ফ্রিজে রাখা উচিত না

fridge-food-PBA

পিবিএ ডেস্ক: গ্রীষ্ম কিংবা শীতকাল সব ঋতুতেই অনেক খাবারই আমরা ফ্রিজে সংরক্ষণ করি।ফ্রিজে খাবার রাখা নিত্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তবে সব খাবার ফ্রিজে রাখলে ভাল থাকবে এমন কথা নেই।ফ্রিজে রাখার ফলে কিছু কিছু খাবারের স্বাদ গন্ধ নষ্ট হয়।

শুধু তাই নয়, অনেক খাবারের পুষ্টিমানও কমে যায়।কিছু খাবার পঁচেও তাড়াতাড়ি। ফ্রিজে রাখলে সমস্যা হয় এমন কিছু খাবার সম্পর্কে আসুন জেনে নেই।

১. কফি: কফিকে ফ্রিজে রাখলে এটির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কফির গন্ধ যা এর মূল আকর্ষণ সেটাই চলে যায়। এর পরিবর্তে এক ধরণের দুর্গন্ধ তৈরি হয়। তাই কফিকে সংরক্ষণ করতে চাইলে বাইরে রাখুন।

২. টমেটো: টমেটো রয়েছে অনেক গুণাগুণ।এই সবজিটি কাঁচা খেতে পারলে তা শরীরের ভিটামিন ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। আবার বিভিন্ন তরকারিতে দিলে তরকারির স্বাদে পরিবর্তন আনে। কিন্তু এই সবজিটি যদি ফ্রিজে রাখা হয় তাহলে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এর গন্ধ নষ্ট হয়ে যায় ও তার আকারেরও পরিবর্তন হয়ে যায়। এইসব কারণের জন্য ফ্রিজে টমেটো রাখা উচিৎ নয়।

৩. আলু: ফ্রিজে আলু রাখলে ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাস আলুর শর্করার গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়, আলুতে যে মিষ্টি ভাবটা থাকে তা শুষে নেয়। এর ফলে আলুর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। আলুকে ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাসে নয় বাইরের ঠান্ডা বাতাসে রেখে দিতে পারেন। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় আলুকে সংরক্ষণ করা যেতে পারে তবে ফ্রিজের অতিরিক্ত ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় নয়।

৪. মধু: মধুকে সংরক্ষণ করতে চাইলে তা ফ্রিজে রাখার পরিবর্তে বাইরে ঠান্ডা জায়গায় রাখতে পারেন। বাইরে ঢাকনা ভালোভাবে লাগিয়ে রাখলে মধু অনেকদিন ভালো থাকে। ফ্রিজে রাখলে মধুর ভিতরে ধীরে ধীরে দানা বাঁধতে শুরু করে।

৫. পাউরুটি: পাউরুটি কেনার কয়েকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। কিন্তু পাঁউরুটি ফ্রিজে রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যে এর নরম ভাব নষ্ট হয়ে শক্ত হয়ে যায়।

৬. তুলসী: তুলসী পাতা ফ্রিজে রাখলে দ্রুত তার তাজা ভাব হারিয়ে যায়। এটি ফ্রিজে রাখা সব খাবারের গন্ধ শুষে নেয়। আমরা যেভাবে একটা টবে বা কাপে জল দিয়ে ফুল ডুবিয়ে রাখি ঠিক সেভাবেই তুলসী পাতাকে রাখা যেতে পারে। এতে এর সতেজতা বজায় থাকবে।

৭. আদা: যদিও আদা ফ্রিজের অতিরিক্ত কম তাপমাত্রাতেও অঙ্কুরিত হতে সক্ষম। তারপরও আদা ফ্রিজে রাখলে স্যাঁতস্যাঁতে ও নরম হয়ে যায়। এর পরিবর্তে আদা শুকনো জায়গায় রাখলেই ভালো থাকে।

৮. অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল অন্ধকারাচ্ছন্ন একটা ঠান্ডা পরিবেশে সংরক্ষণ করতে পারেন কিন্তু কখনই তা ফ্রিজের বেশি ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় রাখা উচিৎ না। কেননা ফ্রিজে এটা আরও বেশি ঘনীভূত হয়ে পড়ে। ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাসে এটি মাখনের মত জমে যায়।

৯. পেঁয়াজ: যদি আপনি ফ্রিজের অতিরিক্ত তাপমাত্রায় পেঁয়াজকে সংরক্ষণ করেন তাহলে এর সকল গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যাবে। এটি নরম আর স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাবে। পেঁয়াজকে ফ্রিজে না রেখে শুকনো জায়গায় রাখুন। এতে পেঁয়াজ সতেজ থাকবে দীর্ঘদিন এবং এর গুণাগুণও নষ্ট হবে না।

১০. চিজ: আপনি যদি নরম তুলতুলে চিজ খেতে চান তাহলে ভুলক্রমেও একে ফ্রিজে রাখবেন না। কারন চিজ ফ্রিজে রাখলে এর গুন ও মান দুটোই নষ্ট হয়ে যায়।

১১। শাক: শাক ফ্রিজে রাখলে ভাল থাকে না, না পঁচলেও খাওয়ার উপযোগী থাকে না। এর চেয়ে গোড়া পানিতে দিয়ে দু’এক দিন রাখা যেতে পারে।

১২। কিছু কিছু ফল: আপেল, কলা, টক জাতীয় ফল, জাম, পিচেস, এপ্রিকটস্ এবং নেকটারাইন ফ্রিজে রাখা ঠিক না। ফ্রিজে রাখলে এসব ফলের গুণমান নষ্ট হয়। তবে একটু তরতাজা অবস্থায় খাওয়ার জন্য খাওয়ার ঠিক আধাঘণ্টা আগে এসব ফল ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। টক জাতীয় পল সহজে নষ্ট হয় না, তবে এগুলো একটির সাথে আরেকটি লাগিয়ে না রেখে সংরক্ষণ করতে হবে।

১৩। ভিনেগার এবং তেল জাতীয় জিনিস: ভিনেগার এবং তেল ফ্রিজে রাখার দরকার নেই। এগুলো এমনিতেই ভাল থাকে। ঘি ফ্রিজে রাখার দরকার নেই। তবে বাদাম তেল ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ভাল।

১৪।সচ: সচ, সয়াসচ, কেচাপ ফ্রিজের বাইরেই ভাল থাকে। এগুলো ফ্রিজে রাখার দরকার নেই।

১৫।শুকনো খাবার: কুড়মুড়ে খাবারগুলো বায়ুরোধক পাত্রে রেখে দিলে ভাল থাকে। এগুলো ফ্রিজে রাখার দরকার নেই।

১৬।আচার: আচার এমনিতেই ভাল থাকে। আচারের চারপাশে বায়ু চলাচল করলে ভাল হয়। এগুলো ফ্রিজের বাইরে রাখা ভাল।

১৭। তরমুজ: আস্ত তরমুজ ফ্রিজে রাখলে গুণমান নষ্ট হয়, তবে কাটা তরমুজ দুই তিনদিন রাখা যেতে পারে।

১৮। জাম: ফ্রিজে রাখলে গুণমান নষ্ট হয়, তাই এগুলো কিনে দ্রুত খেয়ে ফেলা ভাল।

১৯। মশলা: মসলা ফ্রিজে রাখতে নেই, তবে বাটা মশলা ফ্রিজে রাখতে হয়, যদিও তাতে ঘ্রাণ ঠিক থাকে না।

এছাড়াও শুকনো ফল, শুটকী মাছ, মরিচ এগুলোও ফ্রিজে রাখার দরকার নেই।স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এগুলো ভাল থাকে।

পিবিএ/এফএস

আরও পড়ুন...