এস এম হাবিবুল হাসান,সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ”প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে সামিল হই সকলে” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়েছে।
সোমবার(৫ জুন) সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে প্লাস্টিকের ভয়াবহতা তুলে ধরে আমাদের প্রতিবেশ পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতা গড়ে তুলতে বেসরকারি গবেষনা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় ও কোষ্টাল ইয়ূথ নেটওয়ার্কের আয়োজনে প্রচারাভিযান চালানো হয়। সুন্দরবন প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে ডাক বাংলো হয়ে প্রধান প্রধান সড়কে প্লাষ্টিক বর্জনের এই প্রচারাভিযান চালানো হয়।
প্রচার অভিযানে বক্তারা বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, মানবসৃষ্টি নানা উন্নয়ন দূর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি বিশ্ব আজ প্লাস্টিক দূষণ ও প্লাস্টিকের জন্য ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি। প্লাস্টিক দূষনের কারণে আজ প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে পাশাপাশি প্লাস্টিকের জন্য মানব স্বাস্থ্য মারাত্বক ভাবে হুমকের মুখে পড়ছে। প্লাস্টিক সামগ্রী পৃথিবীকে গ্রাস করছে মনে হচ্ছে পৃথিবীতে যেনো প্লাস্টিকের রাজত্ব চলছে । এই প্লাস্টিকের জন্য পরিবেশবান্ধব উন্নয়নে বাধা হচ্ছে, চারিদিকে শুধু প্লাস্টিক আর প্লাস্টিক । প্লাস্টিকের কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, সুন্দরবন এমনকি আমাদের এই সুন্দর পরিবেশকেও বিষাক্ত করে তুলছে। তাই আসুন ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা নিজেদের উদ্দ্যেগে প্লাস্টিক বর্জন করি এবং অন্যদের বর্জন করতে বলি। প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করে পৃথিবীকে দূষণের হাত থেকে মুক্ত করার আহবান জানানো হয়।
এই প্রচার অভিযানে নেতৃত্ব দেন শ্যামনগর উপজেলা জনসংগঠন সমন্বয় কেন্দ্রের সভাপতি কৃষক শেখ সিরাজুল ইসলাম।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘুর্নিঝড়,পানিতে লবনাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙনের পাশাপাশি আজ বিশ্ব প্লাস্টিক দূষন ও প্লাস্টিকের জন্য ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি। অতিরিক্ত মাত্রায় প্লাস্টিক ব্যবহারের কারনে মানুষের স্বাস্থ্য যেমন মারাত্নক ঝুকির মধ্যে আছে সেই সাথে সকল প্রানবৈচিত্র্যও ধংসের পথে। এক সময় আমরা মাটির তৈরী জিনিসপত্র ব্যবহার করতাম কিন্তু র্বতমানে প্লাস্টিকের তৈরী বেশিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে মাটির তৈরী জিনিসপত্র প্রায়ই হারিয়ে গেছে। প্লাস্টিক ব্যবহারের কারনে পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। আমাদের চারপাশে প্লাস্টিকের জন্য নদী-নালা, খাল-বিল তার নিজস্বতা হারিয়ে ফেলছে।বিশেষ করে আমাদের রক্ষাকবচ সুন্দরবনও আজ প্লাস্টিকের কারনে হুমকির মুখে। ইউনাইটেড নেশসনস এর এক গবেষনায় জানা যায় প্রায় ৯০ শতাংশ পাখি ও মাছের পাকস্থলি থেকে প্লাষ্টিকের কনা পাওয়া গেছে। এছাড়াও পৃথিবীতে প্রায় আটশত সামুদ্রিক প্রজাতির মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। মানব শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশের কারনে লিভার, কিডনি নষ্ট,ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ব্রেইন ড্যামেজ, এ্যাজমা এবং নারীদের বন্ধাত্বসহ মারাত্নক ঝুকি সৃষ্টি করছে। সকল প্রাণ ও পরিবেশের জন্য প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন দিন যেন মারাত্নক হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে। আমাদের উপকূলীয় সুন্দরবনকে প্লাস্টিক থেকে রক্ষা করা এখনই সময়।