পিবিএ,ঢাকা: ১৩ বছরের অপহৃত শিশু ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ০৪ বছর পলাতক থাকার পর সাভার থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২
বিগত ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ১৩ বছরের কন্যা শিশু স্কুলে যাওয়া আসার পথে স্থানীয় কিছু বখাটে প্রতিনিয়ত বিরক্ত করতো। ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার পথে শিশুটিকে ৪/৫ জন বখাটে একটি সাদা মাইক্রোবাসে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং আটকে রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। শিশুটির পরিবার অনেক খোঁজা-খুঁজি করে কন্যা শিশুটিকে না পাওয়া গেলে পরবর্তীতে জানতে পারেন যে, বখাটে মোঃ নয়ন আহম্মেদ সহ তার সহযোগীরা তাদের মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ভিক্টিমের বাবা বাদী হয়ে ডিএমপি ঢাকা, মিরপুর মডেল থানায় মামলা নং-১৬ এ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৭/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় ভিকটিম শিশুটিকে রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে উদ্ধার ও আসামী মোঃ নয়ন আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত মামলায় আসামী মোঃ নয়ন আহম্মেদ ২ মাস কারাবাস করার পর জামিনে মুক্ত হয়ে নিয়মিত আদালতে হাজিরা না দিয়ে পলাতক হয়। অন্যদিকে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে অপহরণ সহ ডাক্তারী পরিক্ষার মাধ্যমে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়ায় বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সং/২০০৩) এর ৯(১)/৭ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরবর্তীতে মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঘটনার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামী মোঃ নয়ন আহম্মেদ (২২)’কে বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ আসামীকে উক্ত মামলায় ৭ ধারায় ১৪ (চৌদ্দ) বছর কারাদণ্ড ও ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা অর্থদন্ড অনাদয়ে ৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৯(১) ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা অর্থদন্ড অনাদয়ে ৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডপ্রদান পূর্বক গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে আসামী দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে রয়েছে মর্মে তথ্যের ভিত্তিতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ নয়ন আহম্মেদ’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল গতকাল ২১ জুন সাভার থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ নয়ন আহম্মেদ (২২)’কে গ্রেফতার করে।
আসামীকে গ্রেফতারপূর্বক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উল্লিখিত মামলার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায় যে, গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর হতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকাকালীন সে কখনো এসি, ফ্রীজ এর মেকানিক এবং ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশের কাজ করতো। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে র্যাব-২ এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।