নাজমুল হুসাইন,ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামীকাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আগামীকাল শনিবার (১৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সকাল ১১টায় মিটিং ডাকা হয়েছে। এ মাসের ১৯ তারিখের মধ্যে সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে পাঠানো হবে। কেমন ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিটিংয়ে সকলের মতামত গ্রহণ করা হবে। তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। এর আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।
এদিকে আগামী ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সেল।
এদিকে ঘটনার ছয় মাসে পেরোলেও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মেলেনি। এ নিয়ে নির্যাতনের শিকার ফুলপরি খাতুন বলেন, তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়। কোন ধরণের শাস্তি আশা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামীকাল সিদ্ধান্ত দিক তারপর মন্তব্য করবো।
এদিকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, আমি তো কোনো অপরাধ করি নি। এই ঘটনায় প্রথম থেকে আমাকে বলির পাঠা করা হয়েছে। এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারছি না।
এর আগে গত ১২ জুন ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে মৌখিক বক্তব্য দিতে ক্যাম্পাসে আসেন সাময়িক বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী। কমিটির কাছে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়ার পরও কোন বক্তব্য থাকলে তা জানতে এই বক্তব্য গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনেরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এসময় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রæয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গনরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী ও পরিসংখ্যান বিভাগের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে হল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উচ্চ আদালত এবং শাখা ছাত্রলীগ কতৃক পৃথক চারটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের আলোকে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই পাঁচ অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগ তাদের তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বহিষ্কার করে।