আপিল বিভাগে মেয়র জাহাঙ্গীরের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায় প্রসঙ্গে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার ঘটনায় আপিল বিভাগে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে হাজির হয়ে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

তবে, এদিন আদালত মেয়রকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেননি। তার বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুলের শুনানির জন্য আগামী ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। ওইদিনও দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে কোর্টে হাজির হতে হবে।

আদালতে দিনাজপুর পৌর মেয়রের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।

আদালত থেকে বের হয়ে পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে মন্তব্য করার ঘটনায় আমি অনুতপ্ত।

এর আগে গত ১৭ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায় প্রসঙ্গে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আপিল বিভাগে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন সর্বোচ্চ আদালত।

এছাড়া বিচারপতিকে নিয়ে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৩ আগস্ট বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। বক্তব্যে তিনি খালেদা জিয়ার মামলায় হাইকোর্টে রায়দানকারী বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। শুধু বিরূপ মন্তব্য করেই তিনি থেমে থাকেননি বিচারের রায় নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন।

মেয়রের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। বিষয়টি নজরে আসায় তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য শফিক রায়হান শাওন, মাহফুজুর রহমান রোমানসহ চার আইনজীবী। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।

আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি বলেন, এভাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি ও মামলার রায় নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। এটা আপনাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ইনায়েতুর রহিম আপিল বিভাগের বিচারক। একজন বিচারপতি সম্পর্কে মেয়র যে ভাষায়
গালিগালাজ করেছেন তাতে কোর্টের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে।

মেয়রের পক্ষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, পাবলিক মিটিংয়ে সে এই বক্তব্য রেখেছে। উনি তার বক্তব্য সম্পর্কে জ্ঞাত। উনি এটা কনটেস্ট করতে চান না। বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

শুনানি শেষে আপিল বিভাগ মেয়রকে তলবের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন আদালত।

আরও পড়ুন...