‘শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার শিকার খালেদা জিয়া’

বেগম খালেদা জিয়ার দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির জন্য শেখ হাসিনা দায়ী থাকবেন এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

বুধবার (১১ অক্টোবর) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ইউনাইটেড ল’ ইয়ার্স ফ্রন্টের (ইউএলএফ) উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিএনপি সমর্থক ও সরকারবিরোধী কয়েক শ’ আইনজীবী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট দিয়ে রাজপথে প্রবেশ করেন। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিল শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারা, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান হয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান গেটের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে কয়েক শ’ আইনজীবী অবস্থান কর্মসূচিতে পালন করেন।

ইউএলএফের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় হিংস্রতা ও বর্বরতার শিকার। খালেদা জিয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার। তাই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য, বিদেশে প্রেরণের জন্য আজকে আইনজীবী সমাজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে।

বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল বলেন, আমরা একটা কথা সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আনফর্চুনেটলি বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়, সেজন্য আইনজীবী সমাজ প্রস্তুত রয়েছে। যারা ওনার এই দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির জন্য দায়ী থাকবেন বা দায়ী আছেন তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে মামলা করা হবে। আর ওই মামলার এক নম্বর আসামি হবেন শেখ হাসিনা, দুই নম্বর আসামি হবেন অনির্বাচিত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং তিন নম্বর আসামি হবেন দলকানা অ্যাটর্নি জেনারেল।

তিনি আরো বলেন, এখনও সময় আছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করুন। অন্যথায় আইনজীবীরা রাস্তায় নেমেছে। প্রয়োজনে তাদের বুকের তাজা রক্ত এই পিচঢালা রাস্তায় ঢেলে দেবে। তবুও ঘরে ফিরে যাবে না।

অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউনাইটেড ল’ ইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীন বলেন, এই সরকার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে জানে না। এই সরকার গণতন্ত্র বুঝে না, এই সরকার আইনের শাসন বুঝে না, এই সরকার মানবাধিকার বুঝে না। তাই প্রত্যেকের সমস্বরে বলা উচিত এই সরকার এ দেশের জনগণের মুক্তি চায় না। এই সরকার জনগণের ভালো চায় না। তারা চায় শুধু কিভাবে নিজেদের দলের লোকজনের উন্নতি। তারা চায় শুধু কিভাবে বিদেশে জনগণের টাকা পাচার করবে। তারা লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করে ব্যাংকগুলো ফাঁকা করে ফেলেছে। আর করবেন না। দেশটাকে বাঁচান, গণতন্ত্রকে বাঁচান, মানুষকে বাঁচান এবং মানবাধিকার রক্ষা করার চেষ্টা করুন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি একটি দলের প্রধান হয়ে আরেকটি দলের প্রধানের ওপর প্রতিশোধ নিতে যাইয়েন না।

ইউএলএফের কো-কনভেনার সুব্রত চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, দেশের মানুষের রাগ, ক্ষোভ যদি বাড়তে থাকে তাহলে আপনার জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।

অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি।

ইউএলএফের সমন্বয়ক গাজী কামরুল ইসলাম সজলের সঞ্চালনায় ও ইউএলএফের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের কনভেনার শাহ আহমেদ বাদলের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য দেন ইউএলএফের কনভেনার সৈয়দ মামুন মাহবুব, আইনজীবী নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, রেজাউল করিম খন্দকার, ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, নূরে এরশাদ সিদ্দিকী প্রমুখ।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজাল, আইনজীবী আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, আবেদ রাজা, মোহাম্মাদ আলী, মো: আক্তারুজ্জামান, মাহবুবুর রহমান খান, গাজী তৌহিদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম সুমন, মো: মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ।

আরও পড়ুন...