পিবিএ, সুনামগঞ্জ : প্রথমধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রবিবার ভোট গ্রহনকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার একটি ভোট কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে আধা ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে এজেন্ট সহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৭ জনকে সুনামগঞ্জ সদর ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার সকাল ৯টায় উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের পুরানঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ওই সংঘর্সের ঘটনাটি ঘটেছে।’ এ নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা ও বিএনপির ঘরানার মোটরনসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।
স্থানীয় ভোটার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে প্রার্থী করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুলের এজেন্ট ও সমর্থকরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিদ্ধন্ধী বিএনপি ঘরানার মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুল হকের এজেন্টদেরকে সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পুরানঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটে কেন্দ্র থেকে জোরপুর্বক বের করে দেয়।
এর পর ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ও কেন্দ্রের ভেতর অবস্থানরত ভোটারদের হাত থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যালট কেড়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দেয়া শুরু করা হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকরা বাধা দেন। পরবর্তীতে এ নিয়ে উভয় প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্রস্বশ্র নিয়ে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকদের মধ্যে আহতরা হলেন, উপজেলার পুরানঘাট গ্রামের ফজলুল হক তালুকদার ফজলু (৩৮), ফারুক আহমদ সুমন (৩৬), শাহাবুদ্দিন আহমদ (৪০), দুলাল মিয়া (৪০) মজিবুর রহমান (৪২)। গুরুতর আহত ফজলুল হক ফজলু, ফারুক আহমদ সুমন ও দুলাল মিয়াকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও দুলাল মিযাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে মোটর সাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এজেন্ট ও সমর্থকদের মধ্যে আহতরা হলেন, আবদুল মোতালিব (৫৮), মোহাম্মদ আলী (৩০), আবু ছায়েদ (৩২),মহি উদ্দিন (৫৫), রবিন মিয়া (১৯), ইউপি সদস্য আবু তাহের (৪২), আবদুস সহিদ তালুকদার (৪৫), এনামুল হক এনাম তালুকদার (৩৮), মিষ্টার মিয়া (৩৫), রবিকুল(৩৫), হারিছ (৩০), নুর জামাল (৩৭), সাইফুদ্দিন (৩২), কাজল মিয়া (৪২), জাহাঙ্গীর (৩০), তাজেল মিয়া (৩২), । আহতদের মধ্যে আবদুল মোতালিব, মোহাম্মদ আলী, রবিন মিয়াকে সুনামগঞ্জ সদর ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাহয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট সাবেক ইউপি সদস্য আবু তাহের জনান, নৌকার সমর্থক আবুল বাশার জুয়েলের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি গ্রুপ সকাল ৯টার দিকে ভোট কেন্দ্র থেকে আমাদেরকে বের করে দিয়ে জোরপুর্বক ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে কয়েক শতাধিক জাল ভোট ব্যালট বাক্সে ভরে দেয়।
উপজেলার পুরানঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এস.এম ইসরানুল হক সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রথমে কেন্দ্রের বাহিরে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুই সমর্থকদের মধ্যে হাতাহতি হলে পরবর্তীতে কেন্দ্রের ভেতর থাকা উভয় প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকরা কেন্দ্রের বাহিরে গিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর জানান, সংঘর্ষের কারনে কিছু সময় ভোট গ্রহন বন্ধ থাকার পর ওই কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ ও ষ্ট্রাইকিং ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় পর ফের ভোট গ্রহন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
পিবিএ/এইচএসএ/জেডআই