শাকিবকে সাইনবোর্ডের মতো ব্যবহার করেছে, বুবলীকে অপু

বুবলীর সঙ্গে গানবাংলার কর্ণধার কৌশিক হোসেন তাপস প্রেম করছেন—এমন গুঞ্জন উসকে দেয় গানবাংলা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নীর একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট। সেখানে দাবি করা হয়, চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী ও গানবাংলা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপসের প্রেম চলছে।

স্ট্যাটাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই শুরু হয় নানা আলোচনা। সেদিন দুপুরের পর নিজের আইডি থেকে এক স্ট্যাটাসে মুন্নী জানান, তাঁর আইডি কিছুক্ষণের জন্য হ্যাক হয়েছিল। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পার হতে না হতেই ‘তাপস-বুবলীর প্রেম’ নিয়ে অপু-মুন্নীর কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যেখানে বুবলীকে নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ করেন মুন্নী।

কিন্তু সম্প্রতিদেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই ফোনালাপের দায়ভার অপু বিশ্বাসের ওপর চাপান মুন্নী। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, অপু বিশ্বাস তার অনুমতি না নিয়েই কলটি রেকর্ড করেছেন। তখন তিনি মানসিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। তাই তিনি অপু বিশ্বাসের কথা শুনে কনফিউজড হয়ে যান।

এদিকে এই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পরেদিন গত বুধবার মধ্যরাতে ফেসবুকে রহস্যময় এক পোস্ট দেন অপু বিশ্বাস। নেটিজেনদের মতে, সেই স্ট্যাটাসে পরোক্ষভাবে বুবলী-তাপস-মুন্নীর বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করেছেন অপু। এবার বিষয়টি নিয়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন অপু বিশ্বাস। সেখানে তিনি ভাইরাল অডিও প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।

তাপস-বুবলীর প্রেম: মুন্নীর ‘অনুমতি না নিয়ে’ অপু বিশ্বাস কলটি রেকর্ড করেনতাপস-বুবলীর প্রেম: মুন্নীর ‘অনুমতি না নিয়ে’ অপু বিশ্বাস কলটি রেকর্ড করেন রোববার ভোর ৪টা ৪৬ মিনিটে প্রকাশ করা ভিডিওতে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘গানবাংলার (টেলিভিশন চ্যানেল) মুন্নী ভাবি ও তাপস ভাইয়াকে আমি অত্যন্ত পছন্দ করি। যদিও আমার এত বছরের ক্যারিয়ারে তাঁদের সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি। এমনকি গানবাংলা টিভি কোথায় অবস্থিত, সেটাও আমি চিনি না। তাঁদের সঙ্গে কখনো কথা হয়নি বা কাজ হয়নি।’

ফারজানা মুন্নীর সেই ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে অপু বলেন, ‘এক মাস আগে আপনারা দেখেছিলেন, মুন্নী ভাবি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। যার নামটা বলতে আমার ঘৃণা লাগে, কিন্তু নাম কিছু কিছু জায়গায় উল্লেখ না করলে বুঝতে অসুবিধা হয়। আজকে শুধু আপনাদের ক্লিয়ার করার জন্য নামটা বলতে হচ্ছে। সেটি হচ্ছে বুবলী। বুবলীর একটি কথা নিয়ে মুন্নী ভাবি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন এরকমভাবে যে, বুবলী অ্যান্ড তাপস হ্যাভিং রিলেশনশিপ। অপু বিশ্বাসের লাইফে যেভাবে ঝামেলা করেছে এবং যেভাবে বুবলী বাচ্চা পেটে নিয়েছে; সেই মুন্নী ভাবি ও তাপস ভাইয়ার মাঝে এ রকমই একটি সম্পর্ক তৈরি করতে যাচ্ছে। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ছিল ১৩-১৫ মিনিটের মতো। তারপর স্ট্যাটাসটি উধাও হয়ে যায়। উধাও হওয়ার পর একটা গ্রুপ বলে যে আমি আইডি হ্যাক করেছি।’

অপু আরও বলেন, ‘আমি কিন্তু মুন্নী ভাবির সঙ্গে কখনো কথাই বলিনি। এমনকি তার নম্বরও আমি জানি না। তাহলে রাত ৩টায় যখন তিনি স্ট্যাটাসটা দিলেন, আমি তো ওনাকে বলিনি যে, বুবলীর সঙ্গে তাপস ভাইয়ার সম্পর্কের মধ্যে আমার নাম ধরে স্ট্যাটাসটা দিতে। আমি কি বলেছি যে অপু বিশ্বাসের লাইফটা নষ্ট করেছিল বুবলী? আমি তো তাকে বলিনি। তাহলে কেন ওই সময় আমার নামটা উল্লেখ করে লিখল!’

মুন্নীর সঙ্গে ফোনালাপ প্রসঙ্গে অপু বলেন, ‘একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার একটি পর্যায়ে তাকে বললাম, মুন্নী ভাবির নম্বরটা কি আমাকে দিতে পারবে? কারণ, আমি আসলে কিছু ফোনকল বুঝতে পারছিলাম। মুন্নী ভাবির সঙ্গে আমার সরাসরি কথা বলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তিনি যে পাওয়ারফুল পারসোন্যালিটি, আমি সত্যিই পছন্দ করি। দেখুন, বেলা শেষে প্রত্যেকটা মেয়েই তার স্বামীকে ভালোবাসে। আজকের ভিডিওর মাধ্যমে মুন্নী ভাবিকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই, কারণ তিনি ফার্স্ট প্রায়োরিটি ফ্যামিলিকে দিয়েছেন। আপনি যে কথাগুলো বলেছেন, তা নিয়ে আমার কষ্ট বা মন খারাপ নেই। অবশ্যই প্রত্যেক মানুষ তার সংসার বাঁচাতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই যে তার (ফারজানা মুন্নী) সংসারে টানাপোড়েন, সেই একই তৃতীয় পক্ষ। যে তৃতীয় পক্ষ আমার সংসারটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরি টু সে ভাবি; আপনি যেমন একটি ইনফরমেশন দিয়েছেন যে, একটি ফোন এসেছে রাত ৩টায়, সেখানে অপু বিশ্বাস লেখা, কাইন্ড ইওর ইনফরমেশন, ট্রু-কলারে যে নামটা দিয়ে রেজিস্ট্রার করা হয়, সে নামটা ভেসে আসে। আমার নম্বরটি থেকে যদি আপনার নম্বরে কল যায়, তাহলে ওখানে নাম উঠবে আব্রাম খান। কারণ, আমার ওইভাবে রেজিস্ট্রি করা। মুন্নী ভাবি আমাকে প্রথমে ফোন করেছিল মোবাইল ফোনে। তখন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করতে বলি। কারণ, বিষয়টি সেনসেটিভ। আমার সঙ্গে কিন্তু ওনার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে।’

এক সাক্ষাৎকারে উঠে আসা ফোনালাপ প্রসঙ্গেও কথা বলেন অপু। এ প্রসঙ্গে অপু বলেন, “উনি (ফারজানা মুন্নী) এতটা ডিস্টার্ব ছিল যে, আমার কোনো কথাই বলতে হয়নি। নিজেই বলছিল। তিনি আমাকে বলেছেন “আমি আর এই সংসারে থাকব না।: আমি তখন তাঁকে বলেছি, ‘ভাবি আপনি আমাকে অপু ডেকেছেন না! আমাকে আদর করেছেন না! ওই মহিলার (বুবলী) ইনটেনশন হচ্ছে, প্রতিটা সংসার ভাঙানো। শাকিব অত্যন্ত সরল-সোজা একজন মানুষ। সেই সরল-সোজা মানুষকে যা-তা করে ইউজ করতে পেরেছে সাইনবোর্ডের মতো। আমি আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হতে দেব না। দরকার হলে বলেন, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। আপনি ভাইয়াকে ছেড়ে যাবেন, এটা স্বপ্নে চিন্তা করবেন না। আপনি যদি এই কাজ করেন, তাহলে এখনই ফোনটা কেটে দেব।’ আমি যখন তাকে বললাম, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলি। তখন ভাবি বলল, ‘অপু তোমাকে সে তার কাছে এতটা খারাপ বানিয়েছে যে, তুমি কীভাবে কথা বলবা। সেই স্পেসটাই তো রাখেনি’। আমার বাচ্চাকে নিয়ে সে (বুবলী) বাজে মন্তব্য করেছে।”

তিনি আরও বলেন, ‘ভাবি (ফারজানা মুন্নী) বলছিল, আমি তাকে প্রশ্ন করছিলাম। সে উত্তর দিচ্ছিল। ভাবি আপনি স্ট্রং পারসোনালিটির মানুষ। আমি এখনো আপনাকে রেসপেক্ট করি। তাহলে অযথা কেন আমার মতো নির্দোষ মেয়ের সম্মানহানি করবেন!’

ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে শাকিবের ফোনালাপ নিয়ে অপু বলেন, ‘ভাবি তো শুধু আমাকে না। তিনি শাকিবকে ফোন করছিলেন। শাকিব ফোন ধরছিল না। তখন ভাবি আমাকে বলছিল, শাকিব আমার নম্বর ধরছে না। তখন তাকে বারবার শাকিবের নম্বর মিলিয়ে দিয়েছি। শাকিবকে মেসেজ পাঠিয়েছি তার সঙ্গে কথা বলার জন্য।’ ভিডিও বার্তায় ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা আদান-প্রদানও দেখান। কয়েকটি বার্তা পড়েও শোনান।

আরও পড়ুন...