প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে খেলাধুলা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, লেখাপড়া খুবই দরকার কিন্তু এই লেখাপড়ার নামে তাদের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করবেন না। আমরা এখন চাচ্ছি খেলাধুলা এবং নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই তারা তাদের লেখাপড়া শিখবে। যাতে তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা ও মেধা বিকাশের সুযোগ হয়।
প্রধানমন্ত্রী শিশুকাল থেকেই সততা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা, জাতীয় দিবসগুলো সম্পর্কে শিক্ষাদান এবং রাস্তায় চলার নিয়ম-কানুন তথা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সম্যক ধারণা ছোটবেলা থেকেই প্রদানের জন্যও অভিভাবক-শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানান।
শেখ হাসিনা রোববার সকালে জাতির পিতার সমাধি সৌধ প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং ‘জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, আজকের শিশুদের কাছে এটাই আমার অনুরোধ গুরুজনদের মানতে হবে, শিক্ষককে মানতে হবে, বাবা-মায়ের কথা শুনে চলতে হবে, বাবা মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাহলে কেউ বিপথে যাবে না।
তিনি শিক্ষক-অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির থেকে দূরে থাকার জন্য ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। সেই সঙ্গে গান-বাজনা ও লেখাপড়া, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে ধর্মীয় শিক্ষাসহ সব ধরনের কারিকুলামের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষক আপনাদের কাছে আমার এ অনুরোধ থাকবে- ছোটবেলা থেকেই তাদের ভেতরে যেন মানবিক গুণগুলো গড়ে উঠতে পারে সেদিকে যেমন দেখবেন, তেমনি এই শিশুদের ভেতরে যে সুপ্ত প্রতিভা ও মেধা রয়েছে সেই সুপ্ত প্রতিভা, মেধা ও মনন বিকাশের সুযোগ যেন তারা পেতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন তো শিশুরা বিশ্বকে চোখের সামনে দেখতে পায়। কাজেই ক্লাসে শুধু বই পড়া নয়, চোখে দেখেও যেন তারা শিখতে পারে। আর আজকের শিশুরাই হবে আগামী দিনের ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক’। আর সেটাই আমাদের সরকারের কাম্য।
তিনি বলেন, আমি চাই আমাদের দেশের প্রতিটি শিশু যাতে সুন্দর, নিরাপদ এবং উন্নত জীবন পায়- সেটাই আমার সরকারের কাম্য।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। স্বাগত বক্তৃতা করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। বক্তৃতা করেন শিশু বক্তা তায়্যেবা তাসনীম। অপর শিশু পিয়াসা জামিল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আব্দুর রহমান এবং লামিয়াতুল বারী শিশুদের এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার ১০৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে মোট ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থী পেয়েছেন ৫ হাজার টাকা করে।