ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর খাবার ও পানি দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এর মধ্যে জিম্মি নাবিকদের খাবারে ভাগ বসাচ্ছে সশস্ত্র ১১ জলদস্যু। এদিকে, জাহাজে বহন করা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তপ্ত হতে থাকায়, বিস্ফোরণের শঙ্কাও বাড়ছে। এ অবস্থায়, মুক্তিপণ সংলাপের শুরুতেই জাহাজকে নিরাপদ করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, সাগরে বাল্ক জাহাজে কয়লা পরিবহনে ৫ ধরনের বিপদের শঙ্কায় কিছু নিরাপত্তা পদক্ষেপ মেনে চলতে হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় জাহাজের খোলের ভেতরে মিথেন, কার্বন মনোক্সাইড এবং অক্সিজেনের পরিমাপ নিতে হয়। বের করে দিতে হয় নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত গ্যাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বদ্ধ জায়গায় কয়লা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া মিথেনের পরিমাণ বাড়লে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এ ছাড়া কার্বন মনোক্সাইড বেড়ে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে নাবিকদের জীবনের ঝুঁকিও থাকে।
এসব বিবেচনায় সোমালীয় জলদস্যুদের কবলে থাকা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের কয়লা নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে কি না–তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মালিকপক্ষ ও বিশ্লেষকেরা।
এর আগে, জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে এবং কয়লা যে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য, তা দস্যুদের বোঝানো সম্ভব হয়েছে। জাহাজটির হ্যাজে থাকা কয়লার তাপমাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
যা শুধু জাহাজ কিংবা জিম্মি হওয়া নাবিকদের নয়, দস্যুদেরও বিপদের কারণ হতে পারে। এজন্য জাহাজের নাবিকদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করার ব্যাপারে দস্যুরা অনুমোদন দিয়েছে। এটি ভালো খবর যে, কয়লায় যাতে বিস্ফোরণ না ঘটে সেজন্য নাবিকদের কোনো ক্ষতি জলদস্যুরা করবে না।
এদিকে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী বলেন, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় কয়লার কনসেন্ট্রেশন মেপে দেখতে হয়। বিস্ফোরণের মাত্রার ওপরে উঠে গেলে এটার ফোর্স মেইনটেইন করতে হয়। ফোর্স মেইনটেইন করে মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস বের করে দিতে হয়। এটা ২৪ ঘণ্টার একটা প্রক্রিয়া।
উল্লেখ্য, মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি ওই জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা।