পিবিএ রাবি,প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহের ফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) একদিকে যেমন গরম, অন্যদিকে রাতে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। দিনের বেলা মশার উপদ্রব একটু কম হলেও রাতের বেলায় ক্যাম্পাসের সর্বত্রই মশার উপদ্রব অনেক বেড়ে যায়। মশারী ছাড়া হলে অবস্থান করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
গত কয়েকদিন ধরে মশার উপদ্রব প্রকট আকার ধারণ করলেও কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মশা নিধনের জন্য নিজস্ব দুটি ফগার মেশিন থাকলেও নেই তার ব্যবহার ।ফলে মশার কামড়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব কমাতে গত ২০২২ সালের মার্চ মাসের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে দুটি ফগার মেশিন ক্রয় করে প্রশাসন। কিছুদিন ফগার মেশিনের ব্যবহার দৃশ্যমান থাকলেও এখন আর নেই তার কার্যক্রম। সেগুলো এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনে পড়ে আছে বলে জানা গেছে। এদিকে মাত্রাতিরিক্ত মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সৈয়দ আমীর আলী হল, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক হল, বঙ্গমাতা হলের পিছনের এলাকা রীতিমতো জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। রোকেয়া হলসহ রাবির বিভিন্ন আবাসিক হলের আশেপাশে ঝোঁপঝাড় অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে যততত্র অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বিভিন্ন ভবনের ড্রেন আবর্জনার স্তুপ হয়ে আছে। এতে সহজেই মশার প্রজনন হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের ড্রেন ও জলাশয়গুলোতে অতিরিক্ত আবর্জনা এবং ঝোঁপঝাড়, জঙ্গল, হলের বাথরুম ও ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা।
ফগার মেশিন থাকতে কেন মশার উপদ্রব কমাতে এসব ঝোপঝাড়ে নিয়মিত স্প্রে করা হচ্ছে না, তাহলে ফগার মেশিন কেন ক্রয় করা হয়েছে?—এমন প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আল ইমরান বলেন, “রাবি ক্যাম্পাসে দিনে প্রচন্ড গরম এবং রাতে মশার কামড়ে শিক্ষার্থীরা প্রায় অতিষ্ঠ। মশার উপদ্রবে আমাদের পড়াশোনাতেও ব্যাঘাত ঘটছে। মশারি টানিয়েও আমরা অবস্থান করতে পারছি না। আগে ফগার মেশিন দিয়ে হলগুলোর আশেপাশে স্পে করা হলেও এখন আর স্পে করা হয়না। ফলে মশার উপদ্রব দিনদিন বেড়েই চলেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আলী বলেন, “মশার উপদ্রবে হলে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মশারি টানানো ছাড়া পড়াশোনা করা সম্ভব হচ্ছে না। দিনেও মশা কামড়ায়। তবে এ নিয়ে প্রশাসনকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।”
মশার উপদ্রব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, “এ সময় ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। মশা নিধনের বিষয়ে আমাদের একটা কমিটি আছে। তারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমাদের ফগার মেশিনগুলো ঠিকঠাক আছে। কিন্তু মেশিনগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। আমি ইতোমধ্যে ফগার মেশিন দিয়ে স্পে করতে নির্দেশনা দিয়েছি। আমি আজ আবারও কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিবো বলে জানান তিনি।”