উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, দুর্ভোগে মানুষ

উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রাম ও বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার এবং জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী, নুনখাওয়া ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে বগুড়ায় প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নামে আসা ঢলে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।

কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী, নুনখাওয়া ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার নদী তীরবর্তী ৪১ ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, শুক্রবার সকালে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার এবং হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

অপরদিকে ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পাউবোর প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান।

বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে বানভাসি পরিবারগুলো বসতবাড়িতে বাঁশের মাচান, নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এতে প্রায় ৬২ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানায়, বন্যায় প্রায় ৬২ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন।

বগুড়া

বগুড়ায় প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নামে আসা ঢলে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। শুক্রবার বিকালে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

নিচু এলাকার বাড়িঘর, রাস্তা ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে ১৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ওইসব এলাকার ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ পানবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এদিকে, সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের চর সরুলিয়া, খাবুলিয়া, চর মহনপুর, পূর্ব তেকানী, মহব্বতেরপাড়া ও জন্তিয়ারপাড়া এবং পাকুল্লা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর, আচারেরপাড়া, খাটিয়ামারী, পূর্ব সুজাইতপুর ও বসুনিয়াপাড়ার বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়ায় সেখানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, দু-এক দিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে।

আরও পড়ুন...