কালিহাতীতে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

মনির হোসেন,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ছয় দিনে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে যমুনা নদীর পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এ কারণে তাঁরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে।

পানির তীব্র স্রোতে উপজেলা বেড়ীপটল এলাকার সড়ক ভেঙে গেছে। এতে করে প্রায় কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ওই এলাকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল এ সড়ক।

স্থানীয়রা জানান, তাদের চলাচলের রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হবে। একদিকে চলাচলে কষ্ট, অন্যদিকে বাড়িতে পানি সবমিলিয়ে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। নদীর পানি বাড়ায় অনেক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলের অনেক বাসিন্দা পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু এলাকায় ও অন্যান্যের বাড়িতে অবস্থান করছেন। নিম্নাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চরদুর্গাপুর গ্রামের নাছিমা বলেন, ‘গত ৫ দিন ধরে পানিতে অবস্থান করছি। গরু ছাগল উঁচু জায়গায় রেখে এসে অন্যান্যের বাড়িতে পরিবার নিয়ে কষ্টে করে আছি। নলকূপ তলিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি। একই এলাকার বাসিন্দা জায়দা বেগম বলেন, বাড়ি নিচু হওয়ায় ঘরের ভিতরে পানি উঠে গেছে। খাওয়া দাওয়ার খুব কষ্ট চলছে।

দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন, যমুনা নদী সংলগ্ন হওয়ায় আমর এলাকায় প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি।

উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নে ৯ ওয়ার্ডে ৭টি ওয়ার্ডে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। তাদের সবধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জানান, তার ইউনিয়নে ৪/৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন এবং দশকিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ভূঁইয়া জানান, তার ইউনিয়নে ৩/৪ হাজার মানুষ
পানিবন্দি আছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহাদাত হুসাইন জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে এবং কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এনিয়ে অবগত আছেন। এসব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তালিকা করা হচ্ছে এবং দ্রত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে।

আরও পড়ুন...