পাইপ ও লাঠি হাতে চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মহিউদ্দিন আল আজাদ,চাঁদপুর প্রতিনিধি: মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পাইপ ও লাঠি হাতে নিয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সকল শিক্ষার্থীর হাতে পাইপ, বাশ ও লাঠি হাতে দেখা যায়।

বিক্ষোভ মিছিলটি হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার ঘুরে পূর্ব বাজার বড় ব্রীজের উপর গিয়ে চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

এক পর্যায়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ স ম মাহবুব-উল আলম লিপন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার দে, অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে এগিয়ে যায়।

তারা আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে রাস্তা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আবার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আ স ম মাহবুব-উল আলম লিপনের কথা বলে বেলা দেড়টায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে চলে যায়।

এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের সামনে অবস্থান নেন।

এদিকে একই সময় চাঁদপুর সদরে শিক্ষার্থীরা শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে স্টেডিয়াম রোড, মিশন রোড, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, হাজী মহসীন রোড ও আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়ক হয়ে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ করে।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের সামনে ও পিছনে নিরাপত্তা দিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা, স্পেশাল পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

বিক্ষোভ মিছিলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘দিনে করে নাটক, রাতে করে আটক’, ‘আমার খাও, আমার পর, আমাকেই গুলি কর’, ‘তোমার কোটা তুমি নাও, আমার ভাইকে ফিরিয়ে দাও’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, আমার বোন মরলো কেন, জবাব চাই, জবাব চাই’, ‘দিয়েছিতো রক্ত আরো দেব রক্ত, জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা’ বলে স্লোগান দেয়।

মিছিলে মেয়েদের হাতে রুটি বানানো বেলুন, ডাল, গুটনি, খুনতি ও গুলাই ব্যাগ থেকে বের করতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারি বিভিন্ন বাহিনী, ছাত্রলীগ-যুবলীগ গুলি করে ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। আর পুলিশ নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। চাঁদপুরেও আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে একাধিকবার যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমরা আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে আছি। ইনশাল্লাহ, আমাদের বিজয় হবেই হবে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম ও ডিবি ওসি এনামুল হক চৌধুরীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন...