ডাকসু ভোট নিয়ে ৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘‘বিভ্রান্তি’’ ছড়ানোর অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবন।

পিবিএ, ঢাকা: ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ প্যানেল ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনরায় ভোটের দাবি তুলে নানা কর্মসূচিও পালন করলেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবী করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটি। প্রাধ্যক্ষরা শিক্ষার্থীদের দাবী প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবী জানিয়েছেন।

সোমবার ঢাবি ভিসির সাথে বৈঠক করে তারা এ দাবি জানানো হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

প্রাধ্যক্ষরা বলেছেন, এই নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ছিল। কোনো অভিযোগ তাদের কাছে কেউ দেয়নি।

তিন দশক পর গত ১১ মার্চ ডাকসু ও হল সংসদগুলোর নির্বাচন হয়। এতে ভোটগ্রহণ হয় হলগুলোতে। এই নির্বাচনে স্বউদ্যোগে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষক বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়ার কথা জানিয়ে নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

এই শিক্ষকরা হলেন- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা খানম ও অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রব্বানী।

প্রাধ্যক্ষরা তাদের ভোট পর্যক্ষেণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “স্বেচ্ছাসেবী পর্যবেক্ষক দল নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষক অননুমোদিতভাবে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ ও প্রচার মাধ্যমে নির্বাচন সম্পর্কে অসত্য তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নিন্দনীয় বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়।

“তাদেরকে দায়িত্বশীল আচরণের প্রতি যত্নশীল থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রাধ্যক্ষবৃন্দ উপাচার্য মহোদয়ের নিকট জোর দাবি জানান।”

বৈঠকে প্রাধ্যক্ষদের কাজের প্রশংসা করা হয় জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উপস্থিত ভোটারদের কেউ ভোট দিতে পারেনি বা কারও ভোট অন্য কেউ দিয়েছে বা কেউ ভোট দিতে বাধা প্রাপ্ত বা হেনস্তার শিকার হয়েছে, এমন কোনো অভিযোগ তারা পাননি।”

কুয়েত মৈত্রী হলে উদ্ধার করা হয় ভোট দেওয়া ব্যালটের বস্তা কুয়েত মৈত্রী হলে উদ্ধার করা হয় ভোট দেওয়া ব্যালটের বস্তা
ভোটগ্রহণের আগে কুয়েত মৈত্রী হলে ভোট দেওয়া ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছিল, যার তদন্তে কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বরখাস্ত করেছে ওই হলের প্রাধ্যক্ষকে। এই ঘটনাকে অনিয়মের বড় নজির হিসেবে দেখাচ্ছে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা।

প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভায় বলা হয়, “এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে কতিপয় বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করার হীন অপপ্রয়াসে কোনো কোনো মহল লিপ্ত হয়েছিল।”

সভায় আগামী শনিবার নবনির্বাচিত ডাকসু ও হল সংসদ কার্যকরে পরিষদের সভা এবং ডাকসু ও হল সংসদের নবনির্বাচিত কার্যকর পরিষদের সদস্যদের পরিচিতি ও শুভেচ্ছা বিনিময় এবং দায়িত্বভার গ্রহণসহ পরবর্তী কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়।

ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের এই অধ্যাপককে ডাকসু-২০১৯ এর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...